বিগত বেশ কিছুদিন ধরে ছিল বাংলার প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর মনে একটু চিন্তা। মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা কবে হবে সেই নিয়ে প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর মনে ছিল উৎকণ্ঠা। তাদের এই উৎকণ্ঠা এবং অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে বৃহস্পতিবার কনফারেন্সে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করে দিলেন মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সময়সূচি।
এতদিন ধরে জল্পনা চলছিল হয়তো মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা বাতিল হয়ে যেতে পারে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি আজকের সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটালেন। জানিয়ে দিলেন হবেই পরীক্ষা। তবে এবারের মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বেশ কিছু নতুন নতুন নিয়ম আসতে চলেছে। হয়তো প্রথমবারের জন্য মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া হবে এ বছর। এছাড়াও পরীক্ষার সময় সীমা, প্রশ্নপত্রের ধরন সবকিছুই থাকবে অন্যান্য বছরের থেকে একটু আলাদা। মুখ্যমন্ত্রী বললেন, যেহেতু উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর কোর্সে ভর্তি হওয়ার সঙ্গে জড়িত থাকে, তাই মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। তার সাথেই তিনি জানিয়ে দিলেন, পশ্চিমবঙ্গই হয়তো ভারতের প্রথম রাজ্য যারা এই পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই অতিমারীর মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার কিভাবে উচ্চ মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পরীক্ষা পরিচালনা করবেন তা নিয়ে একটা রোডম্যাপও জানিয়ে দিলেন মমতা। চলুন দেখে নেওয়া যাক সেই রোডম্যাপ।
১. জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে নেওয়া হবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে হবে মাধ্যমিক পরীক্ষা।
২. মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক দুটি পরীক্ষার জন্য কিছুটা করে সিলেবাস কমাবে সংশ্লিষ্ট পর্ষদ।
৩. সিলেবাস কমিয়ে দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হবে ছোট করে, তিন ঘণ্টার পরিবর্তে পরীক্ষা হবে দেড় ঘণ্টা।
৪. পরীক্ষার্থীদের কম প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে।
৫. হোম সেন্টারে পরীক্ষা হবে বাইরের স্কুলে যেতে হবে না।
৬. মাধ্যমিকে শুধুমাত্র মূল পেপারের পরীক্ষা হবে, ঐচ্ছিক বিষয়গুলির পরীক্ষা হবে না।
৭. যেহেতু উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সাথে কলেজে ভর্তি হওয়া নির্ভরশীল থাকে তাই মাধ্যমিকের আগে উচ্চমাধ্যমিক নেওয়া হবে।
৮. প্রশ্ন এবং উত্তর পত্র সংরক্ষিত থাকবে নিকটবর্তী থানা এবং প্রশাসনিক ভবনে।
অন্যদিকে আবার শিক্ষাবিদরা জানাচ্ছেন, সরকার যেভাবে এত মসৃণ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার কথা জানাচ্ছে সেরকম কিন্তু মসৃণ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, প্রথমত একবার সিলেবাস পাল্টে ফেলা হয়েছে, এখন যদি আরো একবার সিলেবাস পাল্টাতে হয় তাহলে হয় পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ধাঁচ পাল্টে ফেলতে হবে, নতুবা প্রশ্নপত্রের কাঠামো পরিবর্তন করতে হবে। যার ফলে পড়ুয়াদের কিন্তু প্রস্তুতি নিতে আরো একটু সময় লাগবে। যদিও এখনও প্রায় দুই মাস রয়েছে, সরকারের তরফ থেকে পরবর্তী নির্ঘণ্ট জানানো হলে তারপর বাকি বিষয়টা বোঝা যাবে।