শুভশ্রী গাঙ্গুলী নামটা অপরিচিত নয় কারোর কাছেই। তিনি বর্তমানে রাজ ঘরনী অর্থাৎ পরিচালক-বিধায়ক রাজ চক্রবর্তীর স্ত্রী। এই মুহূর্তে অভিনেত্রী সুখী নিজের সংসার জীবনে। সংসার ও কাজের পাশাপাশি এই মুহূর্তে তিনি ব্যস্ত রয়েছেন নিজের একরত্তি ছেলে ইউভানকে নিয়েও। সদ্য সদ্য স্কুলে যাওয়াও শুরু করেছে সে। এই মুহূর্তে তিনি একেবারে নিজের মতোন করে কাটাচ্ছেন নিজের জীবনটা। তবে সম্প্রতি একটি পুরনো ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে তিনি নিজের কেরিয়ারের শুরুর চারটে বছর নষ্ট করার কথা জানিয়েছেন নিজের মুখেই।
বছর কয়েক আগে জি বাংলার পর্দায় শুরু হয়েছিল ‘হ্যাপি পেরেন্টস্ ডে’। যেখানে সঞ্চালক হিসেবে দেখা যেত অভিনেতা ও জনপ্রিয় নাট্যব্যক্তিত্ব দেবশঙ্কর হালদারকে। তবে এই রিয়্যালিটি শো খুব বেশিদিন চলেনি টেলিভিশনের পর্দায়। আর এই শোয়ের মঞ্চেই নিজেদের অভিভাবকদের নিয়ে উপস্থিত থাকতেন সাধারণ থেকে তারকা সকলেই। এই রিয়্যালিটি শোয়েরই একটি এপিসোডে নিজের অভিভাবকদের নিয়ে উপস্থিত ছিলেন টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শুভশ্রী গাঙ্গুলী। সেখানেই অকপটে সঞ্চালকের সাথে নিজের মনের কথা ভাগ করে নিয়েছিলেন তিনি।
অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন, তিনি বাড়ির অনেকের অমতে গিয়েই অভিনেত্রী হওয়ার পথে পা বাড়িয়েছিলেন। তার দিদি এবং মা তার কাছে ইনস্পিরেশন। ছোট থেকেই তিনি নিজের দিদির কাছে নায়িকা ছিলেন। সেই থেকেই এই ইন্ডাস্ট্রির উপর তার আগ্রহ। যেকোনো পরিস্থিতিতে মা ও দিদি এই দুটো মানুষকে তিনি পাশে পেয়েছিলেন। বাকিরা সকলেই তার সাফল্যের পর তাকে সঙ্গ দিয়েছিলেন। এমনকি তার বাবা নিজের মুখেই জানিয়েছেন, শুরুতে তার অমর থাকলো পরবর্তীকালে মেয়ের সাফল্য দেখে তিনি সবটাই মেনে নেন। এমনকি খুশির সাথে তিনি এও জানান, অভিনেত্রীর দাদু-দিদা ও দাদু-ঠাকুমা সকলেই তার অভিনয় বড়পর্দায় দেখে যেতে পেরেছেন।
এর পাশাপাশি অভিনেত্রী কথায় কথায় এও জানান, তার জীবনে এমন একটা সময় এসেছিল যখন একটা মানুষকে ভালোবেসে তার কাজের উপর থেকে একেবারে মনোযোগটা সরে গিয়েছিল। তবে এই কথার মাধ্যমে তিনি কার দিকে ইঙ্গিত করতে চেয়েছিলেন! তা বুঝতে বাকি ছিল না কারোরই। কেরিয়ারের শুরুতেই নিজের চারটে বছর নষ্ট করেছিলেন তিনি। তবে সেই নিয়ে তার কোনো আফসোস নেই, কারণ সবটাই তিনি একেবারে নিজের সিদ্ধান্তে করেছিলেন। এরপরেও শোয়ের সঞ্চালক তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন তিনি কাজ ছাড়তে কারোর জন্য বাধ্য হয়েছিলেন কিনা? উত্তরে অভিনেত্রী সরাসরি জানিয়েছিলেন, সবটাই তারই সিদ্ধান্ত ছিল। কারণ জোর করে কিছু হয় না।
টলিউডের সুপারস্টার দেবের সাথে অভিনেত্রীর সম্পর্কের কথা অজানা নয় কারোরই। একটা সময় একসাথে একাধিক হিট ছবি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন তারা। তবে সেইসময়ে মিডিয়ার সামনে নিজেদের সম্পর্ক নিয়ে কখনোই মুখ খুলতে দেখা যায়নি তাদের। তবে তাদের বিচ্ছেদের পরই সবটা সামনে এসেছিল সকলের। ‘পরান যায় জ্বলিয়া রে’ ছবিতে অভিনয় করার পরেই ধীরে ধীরে বড়পর্দা থেকে সরে যেতে থাকেন অভিনেত্রী, তবে সেটা সম্পূর্ণ নিজের সিদ্ধান্তেই। এই ছবির পর আর একসাথে বড়পর্দায় দেখা যায়নি এই জুটিকে।
অভিনেত্রী আরও জানান, একটা সময় ছিল যখন তিনি নিজের বাবা-মায়ের সাথে কথা বলতে বলতে কিছুক্ষণ অন্তর বাথরুমে গিয়ে কেঁদে আসতেন নিজের ভিতরের কষ্টটাকে লুকানোর জন্য। কারণ সবকথা নিজের অভিভাবকদের সাথে ঐ মুহূর্তে ভাগ করে নিতে পারতেন না তিনি। যার জন্য তিনি এই সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলেন, শেষপর্যন্ত সেই মানুষটি তার জীবন থেকে চলে যান। এমনকি তিনি তাকে এও জানিয়েছিলেন, তার হারানোর কিছু নেই। তিনি যদি সেই সময় কিছু পেতেন তাহলে সেটা তার কাছে পরম প্রাপ্তি হত। তবে সেই ঘটনার পর থেকেই তার জীবনের মোড় অন্যদিকে ঘুরতে শুরু করে। অভিনয় জগতে সফল হতে শুরু করেন তিনি। একের পর এক ব্লকবাস্টার হিট দিতে থাকেন বড়পর্দায়। আজ তিনি বাংলা ইন্ডাস্ট্রির একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র।