সুপ্রিম কোর্ট ওয়াকফ সংশোধনী আইন ২০২৫ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ রায় দিল। সোমবার আদালত জানায়, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিলে অমুসলিম সদস্যের সংখ্যা তিনজনের বেশি হতে পারবে না। পাশাপাশি, ওয়াকফ বোর্ডে সদস্যপদ বা ওয়াকফ সৃষ্টির ক্ষেত্রে কিছু বিতর্কিত ধারা আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।
আদালতের রায়ে স্পষ্ট নির্দেশ
প্রধান বিচারপতি ভূষণ রামকৃষ্ণ গাভাই এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহের ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করে। আদালত জানিয়েছে, ওয়াকফ সংশোধনী আইন ২০২৫ পুরোপুরি বাতিল করার কোনও ভিত্তি নেই। তবে কিছু ধারা নিয়ে আইনি প্রশ্ন উঠেছে, সেগুলি নিয়ে পরবর্তী শুনানির আগে সাময়িক স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে।
অমুসলিম সদস্যদের সীমা
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিলে অমুসলিম সদস্য অন্তর্ভুক্ত করা যাবে, তবে সংখ্যা তিনজনের বেশি হবে না। আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এই সীমারেখা ওয়াকফ বোর্ডের ধর্মীয় ও প্রশাসনিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হবে।
বিতর্কিত ধারা স্থগিত
ওয়াকফ সংশোধনী আইনে একটি বিধান ছিল, যেখানে বলা হয়েছিল, ওয়াকফ করার জন্য আবেদনকারীকে কমপক্ষে পাঁচ বছর ধরে ইসলাম ধর্মের অনুসারী হতে হবে। এই শর্তকে আপাতত স্থগিত রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালত জানিয়েছে, যতদিন না পর্যন্ত এ বিষয়ে স্পষ্ট নিয়ম তৈরি হচ্ছে, ততদিন এই বিধান কার্যকর করা যাবে না।
জমি বিরোধ নিষ্পত্তি নিয়ে নির্দেশ
বেঞ্চ আরও জানায়, কালেক্টর বা জেলা প্রশাসকের ওয়াকফ জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির অধিকার নেই। এই ধরনের মামলার নিষ্পত্তি কেবলমাত্র ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে করা হবে। আদালতের মতে, জমি-সংক্রান্ত জটিলতা কেবলমাত্র বিশেষায়িত সংস্থার অধীনে সমাধান হওয়া উচিত।
আদালতের পর্যবেক্ষণ
সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, কোনও আইন একেবারে বিরলতম ক্ষেত্রেই স্থগিত করা যেতে পারে। তাই সংশোধনী আইনের সমস্ত ধারা বাতিল করা যায়নি। তবে আদালত মনে করছে, কিছু বিধান নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে, সেগুলি নিয়ে বিচারপ্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত স্থগিত রাখা প্রয়োজন।
ওয়াকফ সংশোধনী আইন ২০২৫ নিয়ে দেশজুড়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের এই রায় তার কিছুটা দিশা দেখাল। আইন পুরোপুরি কার্যকর থাকবে, তবে নির্দিষ্ট কিছু ধারা আপাতত কার্যকর করা যাবে না। আদালতের এই নির্দেশের ফলে ওয়াকফ বোর্ডের প্রশাসনিক কাঠামো এবং জমি সংক্রান্ত বিরোধে নতুন দিক উন্মোচিত হলো।














