Trending NewsAppleNYT GamesCelebrity NewsWordle tipsBig 12 SoccerCelebrity BreakupsKeith UrbanUnited Nations Day

ছোটবেলায় কেমন কেটেছিল সুশান্তের জীবন? ফাঁস করলেন স্কুলজীবনের বন্ধু

Updated :  Monday, June 14, 2021 11:01 AM

এক বছরের আগের ঠিক আজকের দিন ছিল সকলের কাছে অভিশপ্ত। গত বছর রবিবার দুপুরে সামনে এসেছিল সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর সংবাদ। যে খবর নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা ভারতের মানুষ তথা পৃথিবীর নানান প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা সুশান্তের ফ্যানদের। দেখতে দেখতে একবছর অতিক্রান্ হয়ে হয়। সময়ের চাকা কতই না দ্রুত ঘোরে। একবছর হলেও সুশান্তকে আজ ও কেউ ভোলেনি বরং সকলের মণিকোঠায় এই নাম আছে আর ভবিষ্যতে থাকবে। তবুও সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর ঘটনা আজও রহস্যের বেড়াজালে আটকে সকলের কাছে। তিনি সত্যি কি আত্মঘাতী নাকি খুন।

আজ সুশান্তের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। অভিনেতার প্রয়াণ দিবসের আগে তাঁর স্মৃতিচারণায় মগ্ন হলেন নভ্য জিন্দাল। সুশান্তের খুব কাছের বন্ধুদের অন্যতম ছিলেন নভ্য। স্কুলজীবন থেকে শুরু এই দুই বন্ধুর পথ চলা। তবে সুশান্ত এখন তাঁকে একা রেখে চলে গিয়েছে। আজও নিজের শৈশবের বন্ধুর চলে যাওয়াটা মেনে নিতে পারেননি তিনি এমনকি বিশ্বাস করতেও চান না এমন একটা সত্যি।

এক সংবাদমাধ্যমকে নভ্য জানান, ‘তিনি এখনো ভাবেম এটা একটা দুঃস্বপ্ন… কেটে যাবে। গত দু-দশক ধরে, সুশান্ত তাঁর জীবনের এনার্জি আর খুশির ভান্ডার হয়ে থেকেছে। সুশান্ত যখন নামী তারকা হয়ে যায়, তখন তাঁদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগটা আর ছিল না, ও ব্যস্ত থাকত রোজ কথা হত না। তবে তাঁরা দুজনেই জানতেন একে অপরের পাশে আমরা সবসময় আছেন। 

স্কুলজীবনের স্মৃতির কথা বলতে দিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন নভ্য। তিনি বলেন, দুজনেই দিল্লিতে নতুন ছিলে । কুলচা হংসরাজ মডেল স্কুলে ক্লাস ইলেভেনে ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি উজ্জয়ন , আর  সুশান্ত পাটনা থেকে এসেছিলেন। প্রথমদিন ক্লাসে দাঁড়িয়ে নিজের পরিচয় দেওয়ার সময় নভ্য বলেছিলেন, তিনি আগের স্কুলের বাস্কেট বল টিমের ক্যাপ্টেন ছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে সুশান্ত তাঁকে বলে ওঠে তিনি নাকি তাঁর থেকে বাস্কেটবলটা শিখবেন। সেই ক্লাস ইলেভেন থেকে তাঁদের বন্ধুত্বের শুরু’।

নভ্য আরো জানান, এরপর সেই বন্ধুত্বের ডোরটা দিনে দিনে মজবুত হয়েছ। মুখার্জি নগর কলোনিতে একাই থাকতেন সুশান্ত, তাই স্কুল শেষে বন্ধু নভ্যর বাড়িতেই চলে যেতেন, একসঙ্গে বসে আইআইটি আর জয়েন্ট এন্টার্স পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। কাল সাতটা থেকে রাত ৮-৯টা, দিনের বেশিরভাগ সময়টাই একসঙ্গে কাটাতেন সুশান্ত আর নভ্য। দ্বাদশ শ্রেণীর রেজাল্ট হাতে পাওয়ার পর আরও একবছর দিল্লিতে থেকে জয়েন্ট এন্টার্সের জন্য তৈরি হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সুশান্ত, কিন্তু ব্যক্তিগত কারণে দিল্লি ছাড়েন নভ্য। 

পেশায় কম্পিউটার ইঞ্জিয়ানর নভ্য আরো বলেন, সুশান্তের সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব ছিল অভিনেতা যা করবে ভাবতেন সেটা করেই ছাড়ত। মেশিনের প্রতি ওর একটা অদ্ভূত টান ছিল, মনের মধ্যে হাজারো জিজ্ঞাসা ও ছিল। তিনি . সবকিছু বুঝতে চাইতেন জানার আগ্রহ ছিল মেশিনের প্রতি ভালোবাসা ছিল বলেই ও তিনি মেক্যানিলক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে দিল্লি কলেজ অফ ইঞ্জিয়ারিংয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। ও শুধু ইঞ্জিয়ারিংয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করেছিলেন তেমন নয়, দুর্দান্ত ভালো ব়্যাঙ্কও করেছিলেন।

তিনি বলেন সুশান্ত বিজ্ঞানকে খুব ভালোবাসতেন। তারপর আচমকাই অভিনয়ের জন্য সব কিছু ছেড়ে দিলেম। তিনি তখন ভেবেছিলেন সেটা সুশান্তের জন্য সেরা সিদ্ধান্ত ছিলনা। এরপর যখন তিনি কমনওয়েলথ গেমসে শামাক দাভারের গ্রুপে পারফর্ম করলেন সেটা ওর জন্য একটা নতুন দরজা খুলে দিয়েছিল। স্কুল-কলেজে থাকাকালীন অভিনেতা নাটকে অংশ নিতেন, তবে ওইদিনের পর অভিনয়ের জন্য ওর জেদ চেপে গিয়েছিল’। 

প্রয়াত অভিনেতার স্কুলজীবনের এই প্রিয় বন্ধু জানান, গত বছর সুশান্তের জন্মদিনে শেষবার ফোনে কথা হয়েছিল। ওকে তো বেশ চনমনে আর অন্যবারের মতোই প্রাণবন্ত মনে হয়েছিল। তিনি নিজের ভুল স্বীকার করে বলেন , ‘আমি ভেবেছিলাম সুশান্ত ব্যস্ত, নিজের দুনিয়ায় ও খুশি আছে ওকে ডিসর্টাব করাটা ঠিক নয়। এখন ভাবি যদি ওর সঙ্গে আমি নিয়মিত যোগাযোগটা রাখতাম….হয়ত পারতাম ওকে সাহায্য করতে। আমার জীবনে ওর যে জায়গা সেটা অপরিবর্তিত আছে, থাকবে… সেটা আমি কোনওদিন কাউকে দিতে পারব না’।  এই ভাবে ছোটবেলার বন্ধুর স্মৃতিচারণে ডুব দিলেন অভিনেতা।