অডিশন দিতে এসে স্টেশনে রাত কাটিয়েছি, নিজের লড়াইয়ের কথা বললেন ‘অনুরাগের ছোঁয়া’র নায়িকা
বছরের শুরু থেকেই বিভিন্ন চ্যানেলে শুরু হয়েছে নতুন একাধিক ধারাবাহিক। তাদের মধ্যে জনপ্রিয় হল ‘পিলু’ ও ‘আলতা ফড়িং’। এই দুটি ধারাবাহিকই দর্শকদের নজর কেড়েছে। তবে স্টার জলসার পর্দায় শুরু হয়েছে আরো এক নতুন ধারাবাহিক, নাম ‘অনুরাগের ছোঁয়া’। ধারাবাহিকে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন স্বস্তিকা ঘোষ ও ছোটপর্দার পরিচিত অভিনেতা দিব্যজ্যোতি দত্ত। গুণই সব, রূপ বাইরের চাকচিক্য মাত্র, এই ধারণার উপর ভিত্তি করেই তৈরি হয়েছে এই ধারাবাহিক। এই ধারণার উপর ভিত্তি রেখেই লুক সেট করা হয়েছে অভিনেতা-অভিনেত্রীদেরও।
স্বস্তিকা ঘোষ নামটা এই মুহূর্তে দর্শকমহলের কাছে বিশেষ পরিচিত নয়। ‘অনুরাগের ছোঁয়া’ ধারাবাহিকের হাত ধরেই প্রথম লিড অভিনেত্রী হিসেবে টেলিভিশনের পর্দায় ডেবিউ ঘটতে চলেছে তার। তবে তিনি অভিনেত্রী হিসেবে ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন নন। এর আগেও অন্য ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন তিনি। সান বাংলায় ‘সরস্বতীর প্রেম’ ধারাবাহিকে নায়কের বোনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। তবে স্টার জলসার এই নতুন ধারাবাহিক তার কেরিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দিচ্ছে, তা মানছেন অভিনেত্রীও।
দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার রায়দিঘির মেয়ে স্বস্তিকা। সবে সবে উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পার করেছেন অভিনেত্রী। সবে দু’বছর হলো এই অভিনয় জগতে পা রেখেছেন তিনি। অভিনেত্রী জানিয়েছেন, বাবা-মা, দিদি ও ঠাকুমাকে নিয়ে তার সুন্দর পরিবার। তার পরিবারের সদস্যরা এবং তার বন্ধুরা সবসময় তাকে মনের জোর যুগিয়েছে। তারা সবসময় তাকে বলেছে সে পারবে। তিনি এও জানিয়েছেন, ছোট থেকেই বিনোদন জগতের প্রতি টান তার। তার বাবা-মা দুজনেই গান নিয়ে চর্চা করেন। তিনি ভারতনাট্যম শিখেছেন।
রায়দিঘি থেকে একটা সময় কলকাতায় অডিশন দিতে আসছেন। তিন ঘন্টা আসতে এবং তিন ঘন্টা যেতে সময় লাগতো তার। তবে সেই সময়টা তার বাবা ভীষণ ভাবে সাপোর্ট করেছিলেন তাকে। সবসময়ে তার সাথে সাথে থাকতেন তিনি। অনেকসময় নাকি এমনও হয়েছে রাতে বাড়ি ফিরতে পারেননি, বাবার সাথে স্টেশনেই রাত কাটিয়ে দিতে হয়েছে।
বর্তমানে কাজের সূত্রে বাবার সাথে টালিগঞ্জেই থাকেন তিনি। খুব শীঘ্রই তার বাকি পরিবারকে কলকাতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছেন অভিনেত্রী। অভিনেত্রীর কথায়, রায়দিঘিতে গেলে তার দিদির সাথেই সময় কেটে যায়। এখন কলকাতায় থাকাকালীন সকাল ৭’টার সময় কল টাইম থাকে তার। ৬’টায় ঘুম থেকে উঠে রেডি হয়ে শুটিং করতে যান তিনি। বর্তমানে নিজের এই জীবনটা বেশ এনজয় করছেন স্বস্তিকা।
অভিনয়ের পাশাপাশি, রূপচর্চা করতে এবং ঘুমাতে ভালবাসেন তিনি। শুটিং ফ্লোরে গিয়ে অভিনয় করার এই ব্যস্ত রুটিন পছন্দ তার। অভিনেত্রী জানিয়েছেন তিনি লকডাউনে ভীষণভাবে বোর হয়েছেন। রান্নাবান্না কিছুই জানতেন না। কিন্তু লকডাউনে ঘরকন্নার কাজ ও রান্নাবান্নার প্রায় সবটাই শিখে ফেলেছেন। ছোট থেকেই পড়াশোনা করতে ভালো লাগতো না তার। পড়ার সময় গল্পের বই নিয়ে বসে থাকতেন। তবে অভিনেত্রীর কথা শুনেই বোঝা গিয়েছে এই মুহূর্তে নিজের জীবনটা বেশ উপভোগ করছেন তিনি। ইতিমধ্যেই শুটিং ফ্লোরে সকলের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে তার। মাঝেমাঝে ঠিক করে শট দিতে না পারলে টেনসনে পড়ে যান তিনি। অভিনেত্রী জানিয়েছেন, সেটে তার সহ অভিনেতা-অভিনেত্রীরা সেইসময় তার মনোবল যোগান। অনেকসময় চরিত্র নিয়েও তার সাথে আলোচনা করেন অনেকেই। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজের অভিনেত্রী হয়ে ওঠার গল্প জানালেন স্বস্তিকা ঘোষ।