শ্রেয়া চ্যাটার্জি – নোংরা আবর্জনা যুক্ত সরস্বতী নদী এখন পরিষ্কার চকচকে। এ কাজটি করতে যিনি এগিয়ে এসেছেন তিনি একজন আই. এ. এস অফিসার। কিন্তু মিউনিসিপাল কমিশনার ও আই. এ. এস অফিসার আশিস সিং নিজে উদ্যোগ নিয়ে কাজে এগিয়ে এসেছিলেন। ইন্দোরের দুই কিলোমিটার জুড়ে থাকা সরস্বতী নদীর রূপ এখন একেবারে বদলে গেছে। আগের ওই জঙ্গলাকীর্ণ রুগ্ন চেহারাটা বদলে সরস্বতী যেন নবজন্ম লাভ করেছে।
ইন্দোরের কাছে নদী কাহ্ন, তার উপনদী সরস্বতী অনেকদিন ধরেই রুগ্ন অবস্থায় পড়েছিল। অত্যধিক জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং কলকারখানার আধিক্য, শহুরে হওয়ার প্রাধান্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ময়লা আবর্জনা ক্রমশ এই নদীতে ফেলা হতে থাকে। যার ফলে এই নদীটি তার রূপ হারিয়ে ফেলে কুশ্রী নদীতে পরিণত হয়। আই এ এস অফিসার আশিস সিং এগিয়ে আসেন এক মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে। সরস্বতী নদী কে নতুন জীবন দান করেন।
জল দূষণ এখন পৃথিবীতে হওয়া অন্যান্য দূষণ গুলির মধ্যে একটি। গঙ্গা দূষণ হোক কিংবা কোন ছোট ছোট নদীর দূষণ হোক, সব ক্ষেত্রেই একই অবস্থা। সরস্বতী নদী অতি প্রাচীন একটি নদী। ইতিহাসের পাতায় লোককথায় এর নাম পাওয়া যায়। যমুনা নদী থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ধরে এটি চলতে শুরু করেছে। হুগলির সপ্তগ্রাম ছিল প্রধানত নদী বন্দর ত্রিবেণী হল গঙ্গা ও তার দুই শাখা নদী যমুনা ও সরস্বতীর সঙ্গমস্থল। সপ্তম শতাব্দী থেকে ধীরে ধীরে সরস্বতীর উৎপত্তিস্থলে পলি জমতে শুরু করে এবং ষোড়শ শতক নাগাদ এটি প্রায় শুকিয়ে যায় সরস্বতী অবশেষে নিতান্তই খালে পরিণত হয়। তবে মজে যাওয়া শাখা আন্দুল কলেজের পাশ দিয়ে এখনো বয়ে চলেছে। বাংলা নদীগুলির মধ্যে সরস্বতীর উল্লেখ পাওয়া যায় মনসামঙ্গল কাব্যে। মনসামঙ্গল অনুসারে, চাঁদ সদাগর ছিলেন প্রভাবশালী বনিক। তবে বিশ্বাস করা হয়, সরস্বতী, রূপনারায়নের খাত বরাবর গিয়ে মোহনায় পড়তো তাম্রলিপ্ত হয়ে। তখন সরস্বতীর উপনদী ছিল রূপনারায়ন, দামোদর সহ অনেক ছোট ছোট নদী।