তিরুবনন্তপুরম: করোনাকে মারণভাইরাস বলা হয়। ঠিক এরকমই একটা সময়ে ক্যান্সারকে মারণরোগ বলা হত। আজও বলা হয়। কিন্তু আজ ততটা মারণরোগ ক্যান্সেরকে বলা যায় না। কারণ, ক্যান্সারের চিকিৎসা পদ্ধতি বেরিয়েছে। তবুও ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে কেউ এমনটা শুনলে মানুষ আজও আঁতকে ওঠে। কারণ, চিকিৎসা পদ্ধতি বেরোলেও ক্যান্সার সারানোর জন্য কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন এই সকল পদ্ধতি যথেষ্ট কষ্ট দেয় রোগীকে। কেমোথেরাপি দেওয়ার ফলে রোগীর চুল উঠে যাওয়া চিকিৎসার একটি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। তাই ক্যান্সার রোগীদের জন্য চুল দান করার অভিনব উদ্যোগ নিল তিরুবনন্তপুরম সরকারি ডেন্টাল কলেজের পড়ুয়ারা।
গতকাল, শনিবার অর্থাৎ ৭ নভেম্বর ক্যান্সার সচেতনতা দিবস ছিল। আর এই দিন ডেন্টাল কলেজের পড়ুয়ারা চুল দানের মাধ্যমে ক্যান্সার রোগীদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে। আর্থিকভাবে যেসব ক্যান্সার রোগীরা সচ্ছল নয়, তাদেরকে চুল এবং উইগ দান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই কলেজের পড়ুয়ারা। এই অভিনব উদ্যোগে এখনও পর্যন্ত ২০০ জন ছাত্রছাত্রী এগিয়ে এসেছে। জানা গিয়েছে, দু’জন কেমোথেরাপি চলছে এমন ক্যান্সার রোগীকে উইগ দান করেছে তারা।
এ বিষয়ে তিরুবনন্তপুরম সরকারি ডেন্টাল কলেজের এক ছাত্র বিমল জোশে বলেন, ‘লকডাউন হওয়ার সময় আমরা এই পরিকল্পনা করেছিলাম। ভেবেছিলাম লকডাউনের সময় আমরা কেউ চুল কাটব না। চুল বাড়াবো। তারপর লকডাউন উঠে গেলে সেই চুল ক্যান্সার রোগীদের দান করব। এমনকি মঞ্চ করে ক্যান্সার রোগীদের চুল দান করার একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করব। কিন্তু লকডাউন এতটাই দীর্ঘমেয়াদি হয় যে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা সম্ভব হয়নি। তাই আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার জন্য ক্যান্সার সচেতনতা দিবসকে পরবর্তীকালে আমরা বেছে নিয়েছি।’
জানা গিয়েছে, আপাতত ৩০ জন ক্যান্সার রোগীকে সাহায্য করার জন্য কোচির একটি উইগ প্রস্তুতকারী সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছে ডেন্টাল কলেজের পড়ুয়ারা। এক একটি উইগের দাম পড়ে প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা। তাই কম করে ৭৫ হাজার টাকা তোলার পরিকল্পনা রয়েছে পড়ুয়াদের। তিরুবনন্তপুরম সরকারি ডেন্টাল কলেজের পড়ুয়াদের এই অভিনব উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছে মালায়ালাম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। অনেক তারকাই পড়ুয়াদের এই অভিনব উদ্যোগের পোস্টার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন। সব মিলিয়ে ডেন্টাল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের এই অভিনব উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে সকলে।