তিনমাস আগেই ভোট পর্ব শেষ হয়েছে। নির্বাচনী লড়াইতে সিপিএমের সংখ্যা শূণ্য হলেও সবসময় দলের পাশে থেকেছেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র আর রাহুল অরুণোদয় বন্দোপাধ্যায়। সিপিএম হেরে গিয়েও করোনার প্রকোপে হাজার প্রতিকূলতা সত্ত্বেও একদিনের জন্যও বন্ধ রাখেননি সিপিআইএমের শ্রমজীবী ক্যান্টিন। সম্প্রতি ৫০০ দিনে পা রাখলো যাদবপুরের শ্রমজীবী ক্যান্টিন। এই উপলক্ষে সোমবার যাদবপুরে এক বড়সড় অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হয়েছিল দলের তরফে।
মিছিল, কেক কাটা, সিপিআইএম কর্মী ও সমর্থকদের গান সব মিলিয়ে নানান সাড়ম্বরে পালন করা হলো এই বিশেষ দিন। কিন্তু এবার এই অনুষ্ঠান ঘিরেই শুরু হয়েছে নানান সমস্য। এই সেলিব্রেশনের পর রাহুল আর শ্রীলেখা দল ছাড়ার হুঁশিয়ারি দিলেন কেন? আসল ব্যপার হল শ্রমজীবী ক্যান্টিনের সেই বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের দিন দেখা মিলেছে সদ্য বিজেপি দল ছেড়ে আসা অনিন্দ্য পুলক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রূপা ভট্টাচার্যকে। তাঁদের উপস্থিতির ছবি সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষ নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করেছেন। আর তাতেই কিছুটা ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন টলি-অভিনেতা তথা বাম সমর্থক রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র।
এতটাই দুজন্স রেগে গিয়েছে যে প্রকাশ্যে দল ছাড়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তাঁরা। ফেসবুকে শ্রীলেখা লিখেছেন, ‘নিজেকে কমিউনিস্ট বলে সকলের সামনে উল্লেখ করার মতো সাহস আমার নেই। কিন্তু, আমি বামপন্থী। বাম মতাদর্শে বিশ্বাসী। আমায় কি প্রলোভন দেওয়া হয়নি? এমনকী অন্য দলের থেকে আমায় বিধানসভার টিকিটের প্রস্তাব পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। গ্রহণ করলে আমার জীবনটাও অন্যরকম হতে পারত। কিন্তু, তা আমি করিনি। বদলে যে মতাদর্শে বিশ্বাস করি, সেখানেই বরাবর অনড় থেকেছি। নিজের সাধ্যমতো পার্টির হয়ে প্রচার করেছি।’
অভিনেত্রী আরো জানান, তাঁর ইন্ডাস্ট্রির যে সমস্ত সহকর্মীরা বিজেপিতে যোগ দিয়ে টিকিট না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন এবং পরে সেই কারণে দল পর্যন্ত ছাড়লেন তাঁদের যদি তাঁর পার্টি স্থান দেয়, তবে তিনি এইমুহূর্তে দলের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করতে প্রস্তুত আছেন। তিনি এ প্রসঙ্গে লিখেছেন, ‘ আমি অনেক অপমান আর কষ্টের জায়গা থেকে বলছি, আমি সিপিএমের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করব। এরাই আমাকে গালমন্দ করেছিল একদিন। কখনো তাঁকে ‘ছিপিএম’ বলেছে, আবার কখনও ‘ছিলেখা’ শুনতে হয়েছে শুধু তাই নয়। প্রকাশ্যে আইনি নোটিস ধরানোর হুমকিও দিয়েছিল তাঁকে। তাই তাঁদের সঙ্গে একই মঞ্চ ভাগ করা অসম্ভব।’
অন্যদিকে সিপিএম পার্টির সমর্থক রাহুল লেখেন, ‘সিপিআইএমের মঞ্চে যদি টিকিট না পাওয়া হতাশ বিজেপি জায়গা পায় তাহলে আমি আজ এই মুহূর্ত থেকে সিপিএমে সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলাম| আমার বামপন্থা সিপিএমের মুখাপেক্ষী নয়| যে একবারের জন্য ও সাম্প্রদায়িক দলের সাথে জড়িয়েছে,বিশেষত সে যদি সেলিব্রিটি হয়,তার সাথে কোনোদিন এক মঞ্চে আমি থাকব না| সিপিএম ভেবে দেখুক আমাদের প্রয়োজন,না তাদের| দুজনের পোস্ট দেখে দুজনকে অনেকেই সমর্থন করেছেন। এখন এটাই সিপিআইএম কি করে। কাকে প্রয়োজন দলের।