শ্রেয়া চ্যাটার্জি : আজকের এই ঝকঝকে আকাশ দেখলে বোঝাই যায়না যে, দুদিন আগে কি তান্ডব খেলা দেখালো বুলবুল। তাণ্ডবের চিহ্ন সে ফেলে রেখে গেছে কেড়ে নিয়েছে দশটা তাজাপ্রাণ, ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় দু’লক্ষ পরিবার।
রাজু দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী জাভেদ খান বলেছিলেন যে বঙ্গোপসাগরের উপকূলে ভর্তি জেলাগুলিতে কমপক্ষে দুই লক্ষেরও বেশি বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে, আরো ছাব্বিশ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বকখালি এবং নামখানা। ঝড় আসার আগেই অর্ধেক মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল নিরাপদ স্থানে। শুধু একমাত্র উত্তর ২৪ পরগনাতেই ৫ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
বসিরহাট এ পুর্ব মাকালা গ্রাম এ গাছ পড়ে সুচিত্রা মন্ডল নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। গোকনা গ্রামে বেশ কয়েকটি গাছ উপড়ে পড়েছে। রেবা বিশ্বাস ও মনিরুল গাজীর মৃত্যু হয়। পূর্ব মেদিনীপুরের গাছ পড়ে একজন মারা গেছেন। দক্ষিণ ২৪পরগনা জেলায় ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত ঘটনায় দুইজন মারা গেছেন। আটজন জেলে সেইসাথে চারটি ট্রলার নিখোঁজ হয়েছে।
আরও পড়ুন : নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার কবলে স্কুল বাস, আহত বেশ কয়েকজন পড়ুয়া
কলকাতাতেও প্রচুর বিক্ষিপ্ত জায়গাতে গাছ পড়ার ঘটনা ঘটেছে। কলকাতা পৌর কর্পোরেশন পুলিশ কর্মীরা পরেরদিন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় গাছগুলি সরাতে শুরু করে। যাতে সাধারণ মানুষের কোন অসুবিধা না হয়।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে জানান, তিনি নামখানা বকখালির আশেপাশের ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল গুলির একটি সমীক্ষা চালাবেন । বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভন দেব চট্টোপাধ্যায় বলেছেন এই বুলবুলের কারণে যেসব জায়গা বৈদ্যুতিক তার বিচ্ছিন্ন হয়েছে, সেগুলি দ্রুত ঠিক করার ব্যবস্থা চলছে।
সর্বোপরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর কাছে দুর্যোগের খবরা-খবর জানতে চেয়েছেন এবং যতটা সম্ভব রাষ্ট্র সাহায্য করবে বলে জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় তীব্র বুলবুলের কারণে আগামী সপ্তাহে উত্তরবঙ্গের সফর স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেন।
ঝড় থেমে গেছে সবকিছু হয়তো আগের মত হয়ে যাবে, যে যাদের সব চলে গেল তারাই একমাত্র বুঝতে পারে এই ঝড়ের দাপট। বুলবুল আরেকবার মনে করিয়ে দিল আয়লার স্মৃতি।