মুম্বই: অনলাইন গেমস (Online Games) বিতর্ক কিছুতেই যেন বিরাট কোহলির (Virat Kohli)পিছু ছাড়তে চাইছে না। আজ, বুধবার (Wednesday) কেরল হাইকোর্টের (Kerala Highcourt) পক্ষ থেকে বিরাট কোহলি, তামান্না ভাটিয়া (Tamanna Bhatia) এবং মালয়ালম অভিনেতা আজু ভারঘেসের বিরুদ্ধে নোটিস জারি করা হয়েছে। আসলে অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। পাওলি ভারাক্কানের ওই জনস্বার্থ মামলায় দাবি করা হয়েছিল, এই ধরনের অনলাইন জুয়া একপ্রকার প্রতারনারই সামিল। এটা একেবারেই সমাজের পক্ষে একটা অনৈতিক বার্তা বহন করে।
ইতিমধ্যে কেরল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দিয়েছেন, এই অভিযোগটি অত্যন্ত গুরুতর এবং যে সমস্ত সেলিব্রিটিরা এই অনলাইন রামি গেমসের প্রচারে বিজ্ঞাপন করেন, তাঁদের প্রত্যেককে নোটিশ জারি করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশ, আগামী ১০ দিনের মধ্যে তাঁদের জবাব দিতে হবে।
অনলাইন গেম বন্ধের আর্জি জানিয়ে ইতিপূর্বে অন্ধ্রপ্রদেশ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিল। তারপর মাদ্রাজ় হাইকোর্টের পক্ষ থেকে ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলি এবং ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নোটিস জারি করা হয়। এই নোটিসে বলা হয়েছে, সাধারণ মানুষের জীবন সম্পর্কে ভারতীয় তারকারা একেবারেই অবগত নন। তাঁরা শুধুমাত্র নিজেদের মুনাফার কথাই চিন্তা করেন। ক্রিকেটারদের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন রুপোলি পর্দার তারকাদের বিরুদ্ধেও এই নোটিশ জারি করা হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছেন প্রকাশ রাজ, তামান্না ভাটিয়া, সুদীপ এবং রানা।
এই প্রসঙ্গে আপনাদের জানিয়ে রাখি, অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার ইতিমধ্যেই যে কোনও ধরনের অনলাইন গেমিং, অনলাইন বেটিং এবং জুয়া খেলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। গত বৃহস্পতিবার এই মর্মে সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। পাশাপাশি ১৩২টি এইধরনের ওয়েবসাইট এবং অ্যাপের তালিকা তৈরি করে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে, যাতে এই অ্যাপ এবং ওয়েবসাইটগুলির অ্যাকসেস অন্ধ্রপ্রদেশে বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে এই তালিকায় ড্রিম-১১’কে রাখা হয়নি। প্রসঙ্গত, চলতি আইপিএলে ড্রিম-১১’ই মূল স্পনসর। কেন এই অ্যাপটিকে নিষেধাজ্ঞার বাইরে রাখা হল, সেই ব্যাপারে এখনও কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগমোহন রেড্ডি জানিয়েছেন, এই অনলাইন গেমিং তো জুয়ারই একটা প্রকার। সেই কারণে এই খেলায় আত্মহত্যার সংখ্যা বাড়ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষ মোটা আর্থিক ক্ষতির দিকে পা বাড়াচ্ছেন। সেকারণে হিংসাত্মক ঘটনাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এই কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়েছে।
আপনারা সকলেই জানেন, দেশের তরুণ প্রজন্ম কীভাবে অনলাইন গেমের দিকে ঝুঁকছে। মাসখানেক আগে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বেশ কয়েকটি চিনা অ্যাপ বন্ধ করেছিলেন। তারমধ্যে ‘পাবজি’ গেমটাও ছিল। ইতিপূর্বে জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনিকে বেশ কয়েকবার এই গেমটা খেলতে দেখা গিয়েছিল। গোটা দেশে লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর এমনিতেই সাধারণ মানুষের জীবন আর্থিকভাবে বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় এই ধরনের গেমের ফাঁদে পা দিয়ে অনেকেই সর্বহারা হচ্ছেন। সেকারণে অবিলম্বে এই ব্যবসা বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে।