পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীদের বেতন কাঠামো নিয়ে ফের উত্তাল হল রাজ্য প্রশাসন। এবার সরাসরি সপ্তম বেতন পে কমিশন চালুর দাবিতে গর্জে উঠলেন কর্মীরা। কেন্দ্র ইতিমধ্যেই অষ্টম বেতন কমিশন গঠনের ঘোষণা করায়, রাজ্যে ষষ্ঠ পে কমিশনের পরবর্তী ধাপ শুরু করার সময় এসেছে বলেই দাবি সরকারি কর্মচারী সংগঠনের।
২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে সপ্তম পে কমিশন কার্যকর করার দাবি জানিয়ে মুখ্যসচিব এবং অর্থসচিবকে স্মারকলিপি দিয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। সংগঠনের তরফে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, এই দাবির প্রতি যদি সরকার ইতিবাচক না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে বেতন সংশোধন দীর্ঘসূত্রিতার শিকার হবে এবং আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন লক্ষাধিক কর্মচারী ও তাঁদের পরিবার।
কী বলছে কর্মচারী সংগঠন?
সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের বক্তব্য, ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বেতন বৃদ্ধি হলেও, বকেয়া অর্থ আজও পুরোপুরি মেটানো হয়নি। এখনও পর্যন্ত ষষ্ঠ কমিশনের আওতায় ২৫ শতাংশ বকেয়া প্রাপ্য রয়ে গিয়েছে কর্মীদের। এমন পরিস্থিতিতে সপ্তম কমিশনের বিলম্ব শুধু কর্মচারীদেরই নয়, গোটা প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে সমস্যায় ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
তাদের দাবি অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই সপ্তম পে কমিশনের পূর্ণাঙ্গ বা অন্তর্বর্তী রিপোর্ট জমা দিতে হবে। পাশাপাশি, যদি কোনও কারণে কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করতে দেরি হয়, তাহলে ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে মূল বেতনের কমপক্ষে ৫০ শতাংশ হারে ইন্টারিম রিলিফ (IR) দিতে হবে রাজ্য সরকারকে।
রাজ্য সরকারের আর্থিক সংকট?
উল্লেখযোগ্য বিষয়, এখনও পঞ্চম কমিশনের অধীন থাকা বহু কর্মী তাঁদের প্রাপ্য সম্পূর্ণ পাননি। ষষ্ঠ কমিশনের বাস্তবায়ন হলেও তার আর্থিক দায়ভার এখনও পূর্ণ হয়নি। সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই সময় চেয়ে আবেদন করেছে। এর মধ্যে সপ্তম পে কমিশনের দাবি সরকারকে আরও চাপে ফেলতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সরকারি কর্মচারীদের দাবি যদি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে রাজ্যের আর্থিক পরিকল্পনায় বড়সড় পরিবর্তন ঘটতে চলেছে। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের সঙ্গে তাল মেলাতে হলে আগামী এক বছরের মধ্যেই রাজ্যকে স্পষ্ট পরিকল্পনা নিতে হবে — নইলে কর্মীদের ক্ষোভ নতুন আন্দোলনের রূপ নিতে পারে।














