দুর্গাপুজোর আগে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের মুখে হাসি ফোটাল নবান্ন। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা যেখানে ২৬ সেপ্টেম্বর হাতে বেতন পাবেন, তারও আগে রাজ্য সরকারি কর্মীদের বেতন দেওয়ার ঘোষণা করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। মঙ্গলবার রাজ্যের অর্থদপ্তরের পক্ষ থেকে এই সংক্রান্ত একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসের বেতন আগামী ২৪ এবং ২৫ সেপ্টেম্বর কর্মীদের অ্যাকাউন্টে জমা হবে। শুধু নিয়মিত বেতনই নয়, Grant-in-Aid বেতন, Wages, Remuneration, Stipend, Honorarium—সব ধরনের অর্থপ্রদান ওই দিনই সম্পন্ন করা হবে। তবে সেপ্টেম্বর মাসের পেনশন ভুক্তভোগীরা আগামী ১ অক্টোবর থেকে অর্থ পাবেন।
রাজ্য সরকার জানিয়েছে, এবারের সিদ্ধান্তের অন্যতম কারণ দুর্গাপুজোর দীর্ঘ ছুটি। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে ছুটি, যা চলবে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত। ফলে ছুটি শুরুর আগে কর্মীদের হাতে বেতন পৌঁছে দেওয়া হলে উৎসবের খরচ সামলানো অনেক সহজ হবে। অর্থদপ্তরের মতে, এর ফলে কর্মীরা কিছুটা হলেও আর্থিক স্বস্তি পাবেন। অন্যদিকে, রাজ্যের জনপ্রিয় সামাজিক প্রকল্প—যেমন জয় বাংলা, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারসহ একাধিক আর্থিক সহায়তার টাকা সেপ্টেম্বর মাসে উপভোক্তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার (DBT)-এর মাধ্যমে পাঠানো হবে। সেই অর্থ আগামী ১ অক্টোবর থেকে পাওয়া যাবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ রয়েছে। এর জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের DDO এবং Administrators of Deposit Accounts-দের আগেভাগেই বিল বা Advice ট্রেজারিতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজনৈতিক মহলে এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র-রাজ্যের প্রতিদ্বন্দ্বিতার নজির হিসেবেই দেখা হচ্ছে। কারণ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা এবারে ২৬ সেপ্টেম্বর থেকেই বেতন পাবেন বলে ঘোষণা হয়েছে। বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার এ নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। কিন্তু রাজ্য সরকার একধাপ এগিয়ে আরও আগে কর্মীদের হাতে বেতন পৌঁছে দিচ্ছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, ভোটমুখী বাংলায় এই পদক্ষেপ সাধারণ কর্মীদের পাশাপাশি রাজ্যের সাধারণ মানুষকেও প্রভাবিত করতে পারে। দীর্ঘ ছুটির আগে হাতে বেতন পেলে কর্মীরা কেনাকাটা, পুজোর প্রস্তুতি এবং নানা খরচের পরিকল্পনা স্বস্তির সঙ্গেই করতে পারবেন। বিশেষত যাদের পরিবার নির্ভর করে মাসিক আয়ের উপর, তাদের কাছে এই ঘোষণা নিঃসন্দেহে বড় স্বস্তির খবর।













