তীব্র দাবদাহে রীতিমতো প্রাণ ওষ্ঠাগত রাজ্যবাসীর। বৈশাখের শুরুতেই তাপমাত্রার পারদ আকাশ ছুঁয়েছে। প্যাচপ্যাচে ঘর্মাক্ত গরমে বাড়ি থেকে বেরনো দুষ্কর হয়ে পড়েছে সকলের জন্য। এর মধ্যেই সুখবর শুনিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। ৩০-৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা বেগে ঝড় বইতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ঝড়ের সাথে সাথে উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং এবং জলপাইগুড়ি জেলাতে বৃষ্টির পূর্বাভাসও জানানো হয়েছে।
আসলে উত্তরবঙ্গে মাঝে মাঝে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হলেও দক্ষিণবঙ্গ গরমে পুড়ছে। রীতিমতো বাতাসে আগুনের হল্কা বইছে। সেইসাথে দোসর হয়েছে আদ্রতাজনিত অস্বস্তি। ঘর্মাক্ত দক্ষিণবঙ্গবাসী যেন ক্লান্ততার সাথে দিন কাটাচ্ছে। বৈশাখ মাস শুরু হয়ে গেলেও এখনও একবারও কালবৈশাখীর মুখ দেখেনি দক্ষিণবঙ্গ। তবে এখানেই আশার আলো দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। তারা জানিয়েছে এবার উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গ উভয় জায়গাতেই বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া চলতি সপ্তাহে কলকাতাতেও কালবৈশাখীর সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কলকাতাতে কালবৈশাখীর পূর্বাভাস দিলেও আবহাওয়া দপ্তর দক্ষিণের পাঁচ জেলায় তাপপ্রবাহের সর্তকতা জানিয়েছে। তবে চলতি বছরের গ্রীষ্মকাল যেন একটু অন্যরকম। উত্তর ও দক্ষিণ দুই বঙ্গের চিত্র যেন সম্পূর্ণ আলাদা। একদিকে দক্ষিণবঙ্গের যেমন আগুনের হল্কা বইছে ঠিক তেমন উল্টোদিকে উত্তরবঙ্গে বারবার শিলাবৃষ্টি এবং ঝড়ের তান্ডব দেখা যাচ্ছে। একই বঙ্গে প্রকৃতির দুই রূপ কেন দেখা যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা?
বিশেষজ্ঞদের মতে, সিকিম থেকে অক্ষরেখা ঝাড়খন্ড পর্যন্ত বিস্তৃত। এর টানে বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর পরিমাণে জলীয়বাষ্প ঢুকছে উত্তরবঙ্গে। আর সেই কারণেই বৈশাখের শুরুতেই বৃষ্টিতে ভিজেছে উত্তরবঙ্গ। এমনকি শিলাবৃষ্টির জেরে আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার জেলায় অনেক ক্ষতিও হয়েছে। অন্যদিকে, দক্ষিণবঙ্গ এখনও কালবৈশাখীর মুখ দেখেনি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী দীর্ঘ ১৬ বছর পর কালবৈশাখীর জন্য দীর্ঘ বিরতি দেখতে হচ্ছে দক্ষিণবঙ্গবাসীকে। বিশেষজ্ঞদের মতে এর একমাত্র কারণ বিশ্ব উষ্ণায়ন।