পশ্চিমবঙ্গ সরকার বিধবা ও নিঃসঙ্গ পুরুষদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সহায়তা প্রকল্প চালু করেছে, যার মাধ্যমে মাসিক ৫,০০০ পর্যন্ত পেনশন প্রদান করা হয়। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো, স্বামী বা স্ত্রীর মৃত্যুজনিত কারণে একাকী হয়ে পড়া নাগরিকদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
প্রকল্পের মূল বৈশিষ্ট্য
-
মাসিক ১,০০০ থেকে ৫,০০০ পর্যন্ত পেনশন (রাজ্যভেদে ভিন্ন)।
-
সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ স্থানান্তর (DBT)।
-
যেকোনো ধর্ম, জাতি বা সম্প্রদায়ের বিধবা নারী বা নিঃসঙ্গ পুরুষ আবেদন করতে পারেন।
-
বয়সসীমা সাধারণত ৪০ বছর বা তার বেশি।
যোগ্যতা
-
আবেদনকারীকে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
-
বিধবা নারী বা স্ত্রীর মৃত্যুজনিত কারণে নিঃসঙ্গ পুরুষ হতে হবে।
-
বার্ষিক পারিবারিক আয় ১.৫ লাখের নিচে হতে হবে।
-
আবেদনকারী পুনরায় বিবাহিত হলে এই সুবিধা প্রযোজ্য নয়।
প্রয়োজনীয় নথিপত্র
-
মৃত্যু সনদপত্র (স্বামী বা স্ত্রীর)।
-
আধার কার্ড।
-
আবাসন প্রমাণপত্র।
-
আয় সনদপত্র।
-
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বিবরণ।
-
পাসপোর্ট সাইজ ছবি।
আবেদন প্রক্রিয়া
অনলাইন আবেদন:
-
রাজ্যের সামাজিক কল্যাণ বিভাগের ওয়েবসাইটে যান।
-
“বিধবা পেনশন প্রকল্প” বিভাগে ক্লিক করুন।
-
আবেদনপত্র পূরণ করুন ও প্রয়োজনীয় নথিপত্র আপলোড করুন।
-
আবেদনপত্র জমা দিন ও আবেদন নম্বর সংরক্ষণ করুন।
অফলাইন আবেদন:
-
নিকটস্থ জনসেবা কেন্দ্র (CSC) বা ব্লক অফিসে যান।
-
আবেদনপত্র সংগ্রহ করুন ও পূরণ করুন।
-
প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংযুক্ত করে জমা দিন।
-
রসিদ সংগ্রহ করুন।
রাজ্যভিত্তিক পেনশন পরিমাণ
রাজ্য | মাসিক পেনশন | ন্যূনতম বয়স | আবেদন মাধ্যম |
---|---|---|---|
পশ্চিমবঙ্গ | ৭৫০ | ৬০ বছর | অফলাইন |
উত্তর প্রদেশ | ১,৫০০ | ৪০ বছর | অনলাইন/CSC |
দিল্লি | ২,৫০০ | ১৮ বছর | অনলাইন |
কর্ণাটক | ৫,০০০ | ৬০ বছর | অনলাইন/অফলাইন |
বাস্তব অভিজ্ঞতা
গোরখপুরের মায়া দেবী, যিনি ৫২ বছর বয়সে স্বামীকে হারিয়েছেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে মাসিক ₹১,৫০০ পেনশন পেয়ে নিজের ওষুধ ও রেশন খরচ মেটাতে সক্ষম হয়েছেন।
সাধারণ সমস্যাসমূহ ও সমাধান
-
সমস্যা: অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়ায় জটিলতা। সমাধান: নিকটস্থ CSC-তে গিয়ে সহায়তা নেওয়া।
-
সমস্যা: নথিপত্র অসম্পূর্ণ হলে আবেদন বাতিল। সমাধান: সমস্ত প্রয়োজনীয় নথিপত্র প্রস্তুত রাখা।
-
সমস্যা: পেনশন অর্থ স্থানান্তরে বিলম্ব। সমাধান: PFMS পোর্টাল বা ব্যাংকের মাধ্যমে অবস্থা যাচাই করা।