এবার থেকে অন্তত দু মাস অন্তর দিল্লি আসবো, রাজধানী ছাড়ার আগে সাংবাদিক বৈঠকে সরাসরি জানিয়ে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও তিনি সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন তিনি যা যা উদ্দেশ্য নিয়ে দিল্লি সফরে এসেছিলেন তার সমস্ত সফল হয়েছে এবং বিরোধী জোট নিয়ে তার কাজকর্ম ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। আগামী লোকসভা নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রেখে তৃণমূল কংগ্রেস একটি বিরোধী জোট তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। সম্ভাবনা আছে এই জোটে সামিল হবে কংগ্রেস। এই কারণে বর্তমানের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই বিরোধী জোট অত্যন্ত সঙ্গী হয়ে উঠছে।
তার পাশাপাশি দিল্লিতে নিজের জায়গা পোক্ত করার পরিকল্পনা করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও। এবারের দিল্লি সফর সেই কারণেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তৃণমূলের পক্ষে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি সফর ছিল। এইসব করে যেমন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন বিরোধী নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন, তেমনি কিন্তু কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, সড়ক পরিবহনমন্ত্রী নীতিন গড়কড়ির সঙ্গে। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে পেশ করা একটি দাবি পূরণ হয়ে গিয়েছে। তারপরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নতুন ঘোষণা। দিল্লি ছাড়ার আগে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, “ভারতের গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হলে বিরোধীদের একজোট হতে হবে।”
শুক্রবার মমতার দিল্লি সফর শেষ হয়েছে। কার্যত দিল্লি থেকে কলকাতার দিকে রওনা দেবার আগেই তিনি সরাসরি জানিয়ে দিলেন বিরোধী শিবির গুলিকে এবারে একজোট হয়ে বিজেপিকে আটকাতে হবে। তবে এখনো পর্যন্ত বোঝা যাচ্ছে না বিরোধী শিবিরের মুখ কে হতে চলেছেন? অনেকে মনে করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজে হবেন এই বিরোধী শিবিরের মুখ। আবার অনেকের মতামত কংগ্রেস থেকে কেউ একজন হতে পারেন। যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের মুখে স্বীকার করেছেন, তিনি বিরোধী শিবিরের নেতা নন বরং একজন ক্যাডার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সফরে সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী থেকে শুরু করে আরো অনেক কংগ্রেস নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠক করেছেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ এর সঙ্গে। কিন্তু, এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার এর সঙ্গে দেখা হয়নি তার। কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে দেখা হলেও শারদ পাওয়ারের সঙ্গে দেখা না হওয়া নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
সম্প্রতি বাংলা বিধানসভা নির্বাচনে মমতার ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে বৈঠক করতে দেখা গিয়েছিল কোন শরদ পাওয়ার কে। তিনি নিজেও জানিয়েছিলেন, হয়তো এবারের নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে প্রচার করবেন তিনি। কিন্তু তার পরেই, বিজেপি থেকে শরদ পাওয়ার কে রাষ্ট্রপতি করার ভাবনা আসতে শুরু করে। একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ হিসেবে রাষ্ট্রপতি হবার যোগ্য দাবিদার শরদ পাওয়ার। প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ও শরদ পাওয়ার নিজে বৈঠক করেছেন। তাই এই জল্পনা অবশ্যই বর্তমানে রাজনৈতিক মহলে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মোদির বৈঠকের পর থেকেই শরদ পাওয়ার এই বিরোধী ঐক্যের ব্যাপারে একেবারে চুপ মেরে গিয়েছেন। তাকে তেমন ভাবে সামনে আছে দেখা যাচ্ছে না। অন্যদিকে আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তিনি দেখা করেননি দিল্লি সফরে। তাই মমতা এবং শরদ পাওয়ারের দেখা না হওয়া নিয়ে জল্পনা রাজনৈতিক মহলে। যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই জানিয়েছেন, শরদ পাওয়ারের সঙ্গে সরাসরি দেখা না হলেও তিনি তার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন।