ফেসবুকে আলাপ থেকে শুরু, তারপর ঘনিষ্ঠতা। সোশ্যাল মিডিয়ার বন্ধুকে একেবারে নিজের আপন বন্ধু ভেবে ফেলেছিল নদীয়ার এই তরুণী। তারপর আবার সরাসরি বলিউডের বাদশা শাহরুখ খানের সঙ্গে অভিনয়ের প্রস্তাব। নদীয়ার পলাশীপাড়া নিম্নবিত্ত পরিবারের কিশোরী ভেবেছিল হয়তো সেই বন্ধুর দৌলতে তার জীবন একেবারে পাল্টে যাবে। তবে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই তার সেই ভাবনা একেবারে ভেঙে চুরমার হয়ে গেল।
পরিকল্পনামাফিক ওই তরুণীকে মুম্বাইতে পাচার করার সমস্ত প্লানিং করে ফেলেছিল ওই যুবক। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সমস্ত প্ল্যানিং ভেস্তে যায়। চল্লিশোর্ধ এই ব্যক্তিকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তরুণী পাচারের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে মামলা। পুলিশ সূত্রে খবর, শুভান নামক ওই ব্যক্তি দিন কয়েক আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই তরুণীর সঙ্গে আলাপ করে। ধীরে ধীরে দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে।
ফেসবুক প্রোফাইলে নিজের ছেলেরও ছবি দিয়ে রেখেছিল ওই ব্যক্তি। কিশোরী দাবি করেছে, বলিউডের ছবিতে কাজ করার প্রস্তাব দিয়েছিল ওই ব্যক্তি। খুব সহজেই ওই কিশোরী তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়। সুবান তাকে নিতে আসবে বলে দাবি করে। সেই প্ল্যান তৈরি করার জন্য সমস্ত প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়। গত পনেরোই জুলাই নদীয়ার পলাশীপাড়ার কোচিং ক্লাস থেকে ওই কিশোরীকে পিকআপ করে ওই ব্যক্তি। তারপরে সরাসরি হাওড়া স্টেশন। সেখান থেকে মুম্বাইয়ের একটি ট্রেন ধরে শুভান এবং ওই তরুণী।
অন্যদিকে কোচিং থেকে মেয়ে বাড়ি না ফেরায়, অভিবাবকরা চিন্তায় পড়ে যান। পুলিশের ডায়েরি করা হয় এবং ওই কিশোরীর খোঁজ শুরু করে পুলিশ। তার মোবাইল নম্বর ট্র্যাক করে পুলিশ তাকে খুঁজতে চেষ্টা করে কিন্তু সেই সমস্ত যোগাযোগের রাস্তা আগেই বন্ধ করে রেখেছিল সুভান। আগে ভাগেই কিশোরীর নজর এড়িয়ে সিম কার্ড ভেঙে ফেলে বিয়ে ছিল ওই ব্যক্তি। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এরপর পুলিশ যোগাযোগ করে রেল কর্তৃপক্ষ এবং রেল পুলিশের সঙ্গে। হাওড়া স্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে ওই কিশোরীর সন্ধান মেলে। মুম্বাই গামী ট্রেনে উঠতে দেখা যায় তাকে। তারপরে সরাসরি যোগাযোগ করা হয় মুম্বাইয়ের ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ রেলওয়ে টার্মিনাসে। সেখানে রেল পুলিশ শুবানাকে গ্রেফতার করে এবং ওই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশের তৎপরতায় তারিফ করতে হয় এই মামলায়। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে কিশোরীকে এবং সূত্রের খবর অনুযায়ী ইতিমধ্যেই তাকে পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছে নদীয়া জেলা পুলিশ। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে অভিযুক্তকে তুলে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার চেষ্টা করছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ।