জেলিফিশ ভেবে প্লাস্টিককেই খাবার হিসাবে খেতে যাচ্ছে এক কচ্ছপ, সমুদ্রের ধারে এক করুণ চিত্র
শ্রেয়া চ্যাটার্জি : সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে অনেক ছবি ভাইরাল হয়, কিন্তু কিছু ছবি আমাদের সত্যি খুব মন খারাপ করে দেয়। এই ছবিগুলো দেখলে মনে হয় অবলা জীব জন্তু গুলোর সত্যিই কোন দোষ নেই, তাদের মৃত্যুর কারণ হয়তো আমরাই। প্লাস্টিক দূষণের ফলে শুধুমাত্র মানুষ নয়, জীবজন্তুরাও অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
কদিন আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি মানুষকে বেশ কষ্ট দিয়েছে। একটি ক্ষুধার্ত কচ্ছপ বালুচরে শুয়ে আছে তার মুখে একটি প্লাস্টিক। কিন্তু প্রশ্নটা সেইখানেই প্লাস্টিক টি কেন মুখে নিয়ে আছে? যখন এই প্রশ্নের যখন উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হলো, তখন দেখা গেল তার প্রিয় খাবারটি হলো জেলিফিশ। প্লাস্টিক টিকে দেখতে অনেকটা জেলিফিশের মতো। এছাড়া এই ছবিটির ভিতর থেকে একটি আরেকটি কথা উঠে আসছে, সেটি হল এই সমস্ত সামুদ্রিক প্রাণীর খাদ্যের অভাব কি মাত্রায় পৌঁছেছে তবে তারা প্লাস্টিক কে খাবার হিসাবে খেতে চাইছে।
আরও পড়ুন : করোনা ভাইরাসের ভয় চিকেন মাটন এর জায়গা নিচ্ছে কাঁঠাল, দামও বাড়ছে হু হু করে
তবে একটি পরীক্ষা থেকে জানা গেছে প্লাস্টিক যখন আস্তে আস্তে সমুদ্রের তলায় গিয়ে মাটির সাথে মিশতে চায়, তখনই প্লাস্টিকের ভেতর থেকে অদ্ভুত একটা গন্ধ বেরোয় যার সাথে এই কচ্ছপের খাবারের সঙ্গে অনেকটা মিল আছে। আর তাই হয়তো বুঝতে না পেরে সে প্লাস্টিক থেকে খেতে গিয়েছিল। শুধুমাত্র প্লাস্টিকের ব্যাগ নয় প্লাস্টিকের বোতল, প্লাস্টিকের নানা যাবতীয় জিনিস যা সমুদ্রে এসে মেশে সেই দ্রব্য ভুল করে খেয়ে ফেলে অনেক প্রাণীর মৃত্যু ঘটেছে। আমরা অনেক সময় সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখে থাকি। এত কিছু ঘটার পরেও কি আমাদের এতোটুকু টনক নড়বে না? পৃথিবীতে যে পরিমাণ প্লাস্টিক জমা আছে তা একদিনে নির্মূল করা অসম্ভব। তবে চেষ্টা থাকলে পৃথিবী একদিন প্লাস্টিক মুক্ত হবে। আমরা যদি আমাদের সাধ্যমত আমাদের প্রতিদিনকার জীবন থেকে প্লাস্টিক টাকে একটু একটু করে বাদ দি, তবেই হয়তো সকলের মিলিত প্রচেষ্টায় পৃথিবী থেকে প্লাস্টিকে দূর করা সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন : গ্রাম থেকে বিদেশে পাড়ি, বিশ্ববাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০ বছরের বৃদ্ধের আঁকা ছবি
না হলে মানুষের সাথে সাথে এইভাবে অবলা প্রাণী গুলোকে ও মৃত্যুর দিকে আমরা ঠেলে দেবো। প্লাস্টিকের চেয়ার, টেবিল এর বদলে আমরা কাঠের চেয়ার, টেবিল অথবা পুরনো দিনের মতো মাদুর পেতে মাটিতে বসার অভ্যাস করতেই পারি, প্লাস্টিকের জলের বোতল এর জায়গায় আমরা ব্যবহার করতে পারি মাটির কুজো বা বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করতে পারি তামার বোতল অথবা নতুন এখন তৈরি করা হচ্ছে বাঁশের তৈরি বোতল। প্লাস্টিকের থালার জায়গায় ব্যবহার করতেই পারি সেই আগেকার দিনের মতো শালপাতার থালা। হয়তো অনেকেই শুনে ভ্রু কুঁচকাবেন, কারণ আমরা প্লাস্টিকের চকচকে জিনিসে অভ্যস্ত হয়ে গেছি, আমাদের কাছে হয়তো এখন সেই শালপাতার থালা একটু সেকেলে মনে হবে। কিন্তু যদি আমরা একটু কষ্ট করে পুরনো কিছু ব্যবহার করি তাহলে হয়তো পৃথিবীটা আবার আগের মতন হয়ে যাবে। যাতে আখেরে লাভ আমাদেরই হবে।