কুণাল রায়: শাস্ত্র মতে পিতাই পরম গুরু। কিন্তু বৃহত্তম অর্থে, পরম গুরু সেই যে সঠিক পথপ্রদর্শক। এমনই একজন, আমাদের পরম প্রিয়, পরম কাছের গৌতম বুদ্ধ। আজকের এই অতি শুভ তিথিতেই তাঁর আবির্ভাব ঘটেছিল বহুকাল পূর্বে, মূলত মনুষ্য জাতির উত্থানের অভিপ্রায়। সময় অতিবাহিত হয়েছে আপন ছন্দে, কিন্তু আজও তাঁর বাণী প্রতিক্ষণে আমাদের শিক্ষা দিয়ে যায়, সুগম করে তোলে এই চলার পথকে।
আমাদের পৌরাণিক তথ্য অনুযায়ী গৌতম বুদ্ধ হলেন বৈকুণ্ঠনাথ ভগবান বিষ্ণুর নবম তম অবতার। রাজসুখ, নিজের জায়া ও পুত্র রাহুল কে পরিত্যাগ করে বেড়িয়ে পড়েছিলেন সত্যের সন্ধানে। গভীর অন্ধকারে কপিলাবস্তুর রাজপ্রাসাদটি মিলিয়ে গিয়েছিল সেদিন, রাজরাজেশ্বর সিদ্ধার্থ পরিণত হয়েছিলেন এক পরম যোগীতে! মাত্র চল্লিশ দিনে আত্মার সাথে পরমাত্মার মিলন হয়েছিল, সিদ্ধ পুরুষ হয়েছিলেন উনি, এক পিপল বৃক্ষের নীচে, যা আজও গয়ায় স্বমহিমায় বিরাজমান।
এর পর কেটে গেছে বহু যুগ। বৌদ্ধ ধর্ম প্রতিষ্ঠা করে, কলিঙ্গর সমরভূমি পেরিয়ে, শান্তির দূত কথা পেরিয়ে, সারনাথ দর্শন ও শিক্ষার গন্ডী অতিক্রম করে, আজ তিনি আমাদের মাঝে উপস্থিত। তাঁর প্রতিটি বাণী এই বাস্তবের সাথে মিলেমিশে এক হয়ে গেছে। তাই আজ এই কঠিন সময়তেও, তিনি যথার্থ অর্থেই এক পরম গুরু, এক জ্বলন্ত মশাল! গ্লানির পর্বত পেরিয়ে, যদি একটু শান্তির সমীরণ উপভোগ করতে চাই, তবে তাঁর থেকে বড় আশ্রয় আর কেউ নেই। মহাকালের গতির সাথে পরিবর্তিত হচ্ছে আমাদের মনন, আমাদের চেতনা, তাই তাদের শুদ্ধ পরিচালনার প্রয়োজনে চাই এক নির্ভীক সখা, নাম যার গৌতম বুদ্ধ।