কৌশিক পোল্ল্যে: নব্বইয়ের দশকে অন্যতম সেরা অভিনেত্রী দিব্যা ভারতী। মাত্র দু বছরের বলিউড কেরিয়ারেই দর্শকদের মনে চিরতরে জায়গা করে নিতে সক্ষম হয়েছেন এই বলিউড ডিভা। সৌন্দর্য ও অসাধারন অভিনয় প্রতিভা ভরপুর অন্তর্নিহিত ছিল তার মধ্যে। যদিও আরও বড় সুপারস্টার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পূর্বেই মাত্র ১৯ বছর বয়সে পৃথিবী থেকে চিরতরে বিদায় নেন এই অভিনেত্রী। তার মৃত্যু নিছকই দুর্ঘটনা নাকি আত্মহত্যা সেবিষয়ে যথেষ্ট রহস্য লুকিয়ে রয়েছে। চলুন জেনে নিই ঠিক কি হয়েছিল সেদিন রাতে।
তার আগে বলা রাখা ভালো, ইন্ডাস্ট্রির বিখ্যাত প্রযোজক ও পরিচালক সাজিদ নাডিয়াডওয়ালাকে গোপনে বিয়ে করেন দিব্যা, এর মাত্র ১১ মাসের মধ্যেই তার মৃত্যু ঘটে। দিনটি ছিল ১৯৯৩ সালের ৫ই এপ্রিল ‘বিশ্বাত্মা’ নামক হিন্দি ছবি দিয়ে বলিউড ডেবিউ করার পর ‘দিওয়ানা’, ‘শোলা অউর শবনম’ এর মতো সুপারহিট ছবি উপহার দিয়ে তার কেরিয়ার তখন একেবারে তুঙ্গে, পাশাপাশি দক্ষিণী টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতেও বেশ ভীত শক্ত করে ফেলেছেন দিব্যা।
সেদিন শ্যুটিংয়ের কাজে তার হায়দ্রাবাদ যাওয়ার কথা থাকলেও মুম্বাইতে তার একটি ফ্ল্যাটের খুব প্রয়োজন ছিল যেকারনে তিনি মুম্বাইতেই সেদিন রয়ে যান। ফ্ল্যাট বুক করে এসে নেপচুন আবাসনে তিনি বেশ ফুরফুরে মেজাজেই ছিলেন। রাত দশটা নাগাদ দিব্যার ড্রেস ডিজাইনার নীতা লালু ও তার স্বামী অভিনেত্রীর পরবর্তী ছবির ড্রেস ডিজাইন নিয়ে আলোচনা করতে এসেছিলেন, এছাড়াও দিব্যার পরিচারিকা অমৃতা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
অভিনেত্রী তার পরিচারিকাকে রান্নাঘরে স্ন্যাক্স বানানোর কথা বলে ফ্ল্যাটটির একটি বারান্দায় গিয়ে নীচে পা ঝুলিয়ে বসেন এই ফ্ল্যাটের একমাত্র এই জানালাটিতেই কোনো গ্রিল ছিল না। সকলের মনে হয়েছিল তিনি হয়তো শক্তপোক্তভাবেই বসে রয়েছেন। নীতা এবং তার স্বামী সেই সময় টিভিতে ইন্টারেস্টিং কিছু একটা দেখছিলেন, হঠাৎই তারা নীচে কারোর পড়ে যাওয়ার শব্দ পেয়ে এসে দেখেন গ্রিল ছাড়া ওই উন্মুক্ত বারান্দায় দিব্যা বসে নেই। ওই পাঁচতলার আবাসন থেকে সে নীচে পড়ে গিয়ে আধমরা অবস্থায় কাতরাচ্ছে। এরপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পূর্বেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরন ও মাথায় জোর আঘাতের কারনে অভিনেত্রীর মৃত্যু ঘটে।
তার মৃত্যুর খবরে থমকে গিয়েছিল গোটা বলিউড। কেন এমনটা করলেন অভিনেত্রী সেই প্রশ্নই দানা বেঁধেছিল সকলের মনে যদিও পুলিশ এই কেসকে নিছকই দুর্ঘটনার তকমা দিয়ে বন্ধ করে দেন। বহু তদন্ত সত্ত্বেও দিব্যার মৃত্যুরহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। এই দুর্ঘটনার চাক্ষুস প্রমান তার পরিচারিকা অমৃতাও এই ঘটনার একমাস পরেই হৃদরোগে মারা যান ফলে এই রহস্যের কোনো কুলকিনারা হয়নি।