কলকাতা শহরের কুমোরটুলির বুকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ‘ঢাকেশ্বরী মায়ের মন্দির’, জেনে নিন এর ইতিহাস
শ্রেয়া চ্যাটার্জী – পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার কুমারটুলি অঞ্চলে অবস্থিত ‘ঢাকেশ্বরী মায়ের মন্দির’। যদিও বাংলাদেশের ঢাকা শহরে অবস্থিত ঢাকেশ্বরী মন্দির এর মূল বিগ্রহটি এই মন্দিরের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ১৯৪৭ সালে বিমানে করে কলকাতায় নিয়ে আসা হয় এই মূর্তিটিকে। রাজা বিজয় সেনের স্ত্রী লাঙ্গলবন্দে গিয়ে ছিলেন স্নান করার জন্য। ফিরে আসার পথে তিনি একটি পুত্র বল্লাল সেন কে জন্ম দেন। বল্লাল সেন পরবর্তীকালে সিংহাসনে বসার পর তার নিজের জন্মস্থানকে মহিমান্বিত করার জন্য একটি মন্দির তৈরি করেন।
একবার জঙ্গলে আচ্ছাদিত দেবতার স্বপ্ন দেখেছিলেন বল্লাল সেন। বল্লাল সেন সেখানেই দেবীকে আবিষ্কার করেন এবং মন্দির নির্মাণ করেন। মূর্তিটি ঢাকা শহরে নির্মিত হয়েছিল বলে এর নাম ঢাকেশ্বরী। হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের কাছে ঢাকেশ্বরী দূর্গারই একটি রূপ। দেবীর এই মূর্তিটি প্রায় ৮০০ বছরের প্রাচীন সেই মুহূর্তে থেকে কলকাতার কুমারটুলি অঞ্চলের দুর্গাচরণ স্ট্রীট বর্তমানে শ্রী শ্রী ঢাকেশ্বরী মাতার ঠাকুরের মন্দিরে বিরাজ করছে। ভারত-বাংলাদেশ দেশভাগের সময় লক্ষ্য লক্ষ্য মানুষ ভিটেমাটি হারা হয়েছিলেন ঠিক সেই সময় মূর্তিটি কেউ কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। মূর্তিকে কলকাতায় নিয়ে এসেছিলেন রাজেন্দ্র কিশোর তিওয়ারি এবং হরিহর চক্রবর্তী। ১৯৫০ সালে ব্যবসায়ী দেবেন্দ্রনাথ চৌধুরী কুমারটুলি অঞ্চলে দেবীর মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। দেবীকে যেভাবে অলংকারহীন এবং প্রায় বিবস্ত্র অবস্থায় আনা হয়েছিল তার ছবিও মন্দিরে সুরক্ষিত রয়েছে।
মন্দির এর মূর্তিটি উচ্চতায় দেড় ফুট এবং দেবী দশভূজা। দেবীর সামনের হাত দুটি বড় পেছনে হাত তুলনায় ছোট। কাত্যায়নী মহিষাসুরমর্দিনী দূর্গা রূপে অবস্থান করছেন। ওপরে পাশে লক্ষ্মী, সরস্বতী। নিচের দুপাশে কার্তিক, গণেশ। বাহন রূপে পশুরাজ সিংহ দণ্ডায়মান। দেবী মহিষাসুরকে বধ করছেন।