বঙ্গ রাজনীতিতে শুভেন্দু ইস্যু নিয়ে প্রবল জল্পনা-কল্পনার পর অবশেষে পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী তার মন্ত্রিত্বপদ থেকে আজ সকালে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালকে চিঠি পাঠিয়ে ইস্তফা দিল। আজ অর্থাৎ শুক্রবার সকালবেলাতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে নিজের পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেয় শুভেন্দু অধিকারী। যেহেতু আজ নবান্ন স্যানিটাইজেশন এর জন্য বন্ধ আছে তাই মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে সরাসরি চিঠি পাঠায় শুভেন্দু। এরপর সেই চিঠির কপি তিনি রাজ্যপালকে পাঠিয়ে দেন। শুভেন্দু অধিকারী রাজ্য পরিবহণ, সেচ ও জলসম্পদ দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন। নিজের পদত্যাগপত্রে শুভেন্দু লিখেছেন, দীর্ঘদিন ধরে দুটি দপ্তরের মন্ত্রী হিসেবে কাজ করতে পেরে এবং মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানুষের সেবা করতে পেরে তিনি খুবই খুশি। মন্ত্রিত্ব পদ দেওয়ার জন্য তৃণমূল সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুভেন্দু অধিকারীর মন্ত্রিত্ব পদত্যাগ বেশ গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে বলে আনন্দ ভেসেছে বাংলা গেরুয়া শিবির। শুভেন্দুর পদত্যাগ নিয়ে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, “আমি আগে থাকতেই বলেছিলাম তৃণমূল দলে মুষলপর্ব শুরু হয়ে গিয়েছে। তৃণমূল দলটা পুরো একটা সার্কাস। সেখানে আর কেউ থাকতে পারছে না। শাসক দল যেভাবে স্বৈরাচারী পদ্ধতিতে দল চালাচ্ছে, তাতে আর বেশিদিন থাকবে না এই দল। শুভেন্দু বাবু পার্টি ছাড়তে পারেন সেই গুঞ্জন অনেকদিন ধরেই চলছিল আর সেটা হওয়ারই ছিল। আরো অনেক তৃণমূল নেতা দল থেকে বেরিয়ে আসতে চায়।” এছাড়াও এদিন দিলীপ ঘোষ আরও জানিয়েছেন, “শুভেন্দু বাবু যদি বিজেপি দলে যোগদান করতে চায় তাহলে আমরা নিশ্চয়ই তাকে নেব। আমি নিজে শুভেন্দু বাবুর সাথে এখন অব্দি কোনদিন কথা বলিনি তাহলে দরকার পড়লে আমি কথা বলতে পারি। তৃণমূল দলের সংগঠন বলে কিছু নেই। যা আছে সেটা একটা মেলা বা সার্কাস বা পার্টি। মালিক আছে, ডিরেক্টর বা প্রোডিউসার আছে আর আছে কিছু কর্মচারী।” যারা তৃণমূলে সম্মানের সাথে কাজ করতে পারছেন না, তাদের বিজেপিতে যোগদান করার আহ্বান জানিয়েছেন দীলিপবাবু।
অন্যদিকে শুভেন্দুর মন্ত্রিত্বপদ থেকে ইস্তফার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয় বিজেপির যুব মোর্চার নেতা সৌমিত্র খাঁ। তিনি জানিয়েছেন, “শুভেন্দু বাবু মন্ত্রিত্ব পদ ছাড়ার পর রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বা গৌতম দেব কী করবেন এখন সেটাই ভাবার বিষয়। তৃণমূল কংগ্রেসে পিসি ভাইপো ছাড়া আর কেউ থাকবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর তৃণমূল কংগ্রেস এখন ভোগী সরকার হয়ে উঠেছে। এই ভোগী সরকার আর বেশিদিন টিকবে না।” তিনি আরো দাবি করেন, এরপর কমপক্ষে আরও ৫৮ জন বিধায়ক বিজেপিতে আসার জন্য প্রস্তুত আছেন। তিনি হুংকার দিয়ে বলেছেন, এক মাসের মধ্যেই ভেঙে যেতে পারে তৃণমূল পরিচালিত এই সরকার।