দুদিন আগে কলকাতা হাইকোর্ট কেন্দ্রীয় সংস্থা CAG কে রাজ্যে আমফান ত্রাণ বিতরণ দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছিল। কিছুদিন আগে অভিযোগ ওঠে আমফানের ত্রাণ নিয়ে অর্থনৈতিক দুর্নীতি করা হয়েছে। সেই টাকা আসলে যারা ক্ষতিগ্রস্ত তারা আদৌ পাইনি। সেই বিষয় নিয়ে খুঁটিনাটি তদন্ত করার দায়ভার দেয়া হয় CAG কে। পরে সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে আরজি জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। শুক্রবার রাজ্যের সেই আর্জি খারিজ করে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ CAG কেই যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি তদন্ত চালু করতে নির্দেশ দিয়েছে।
রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কলকাতা হাইকোর্টে আর্জি জানিয়ে ছিলেন অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত। কিন্তু আরজি করা সত্ত্বেও কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ সরাসরি জানিয়ে দিয়েছে, তদন্ত শুরু করা নিয়ে রাজ্য সরকারকে আর সময় দেওয়া যাবে না। এরপর রাজ্যের যদি কিছু বলার থাকে বা চ্যালেঞ্জ করার থাকে তাহলে তারা সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে চলে যাক।
গত মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, আমফান ত্রান বিতরণ দুর্নীতির পুরো ঘটনার গভীর তদন্ত করবে কেন্দ্রীয় সংস্থা CAG। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, তারা যাচাই করে দেখবে কারা ত্রান পেয়েছেন। তাদের একটা তালিকা তৈরী করতে হবে। সমস্ত যারা আসল ক্ষতিগ্রস্ত তারা ত্রান পেয়েছেন নাকি সেটাও তাদের জানতে হবে। এছাড়াও ত্রান বণ্টনের সময় যে দুর্নীতি হয়েছে তার জন্য কোন সরকারি আধিকারিক দায়ী তা খুঁজে বার করতে হবে। যারা দুর্নীতির জন্য দায়ী হবে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের তরফে কি পদক্ষেপ নেবে তা জানিয়ে দেবে CAG।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যে বিরোধী পক্ষ শাসক দলকে আম্ফান ত্রাণ দুর্নীতির অভিযোগে কাঠগড়ায় তোলে। তাদের দাবি, ঘূর্ণিঝড়ের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত আসল মানুষ টাকা না পেয়ে সেই টাকা যাচ্ছে ক্ষমতাশালী তৃণমূল নেতাদের পকেটে। তারা বারবার দাবি করে বিডিও অফিসের সামনে কারা কারা ত্রাণের টাকা পাচ্ছে তার তালিকা ঝুলাতে হবে। কিন্তু এতদিন শাসক দল তাদের কথায় কোন পাত্তাই দেয়নি। বরং CAG কে তদন্ত দায়ভার দেওয়ার পর বেজায় চটেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, তাড়াহুড়ো করে টাকা পাঠাতে গিয়ে দু’একটা ভুল হয়ে গিয়েছিল। তা শুধুরে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনের আগে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করে শুধুমাত্র তৃণমূলের বদনাম করার চেষ্টা করা হচ্ছে। অবশ্য রাজ্যের দাবি মানতে নারাজ কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চ। আর্জি করা সত্ত্বেও তদন্ত দায়ভার পেল সেই কেন্দ্রীয় সংস্থা CAG ই।