একুশে নির্বাচনের আগে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নির্বাচনী মাস্টারস্ট্রোক ছিল দুয়ারে দুয়ারে সরকার প্রকল্প। এই প্রকল্পে শাসকদল সমস্ত রাজ্যবাসীর জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ঘোষণা করেছিল। অবশ্য এই নিয়ে বিস্তর সমালোচনা করেছেন গেরুয়া শিবির। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) বরংবার তৃণমূলের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন এসব নির্বাচনী চমক। এই কার্ডের মাধ্যমে রাজ্যবাসীর কেউ পরিষেবা পাবে না। কিন্তু সম্প্রতি জানা গিয়েছে খোদ দিলীপ বাবুর পরিবারের লোক স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কার্ডের জন্য দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে উপস্থিত হয়েছেন। ব্যাপারটি নিয়ে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে গেরুয়া শিবির।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের আদি বাড়ি ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুরের কুলিয়ানা গ্রামে। দীলিপবাবুর মা ও ভাইরা সেখানেই বসবাস করেন। দিলীপ ঘোষের ভাই হীরক ঘোষ গোপীবল্লভপুর ২ নম্বর ব্লকের বিজেপির মণ্ডল সভাপতি। খুড়তুতো ভাই সুকেশ ঘোষ জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি। দিলীপ ঘোষের পাশাপাশি তার ভাইয়েরাও বারংবার তৃণমূলের স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের সমালোচনা করেছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি দেখা গিয়েছে গোপীবল্লভপুরের স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের জন্য যখন ছবি তোলা হচ্ছিল তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন হীরক ঘোষের স্ত্রী ও তাদের পরিবারের একাধিক সদস্য।
এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষের ভাই হীরক ঘোষ বলেন, “তার স্ত্রী ও বাকি সদস্যরা কবে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে ছবি তুলতে গিয়ে ছিল তার তা জানা ছিল না। তিনি গ্রামের বাইরে ছিলেন।” অন্যদিকে দিলীপ ঘোষ এই প্রসঙ্গে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। ইতিমধ্যেই ঘটনা নিয়ে বঙ্গ বিজেপির অন্দরমহলে অস্বস্তির সৃষ্টি হয়েছে। এতদিন ধরে যে নেতা স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের বিরুদ্ধে গলায় সুর তুলেছিলেন তার পরিবারই শেষ পর্যন্ত স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নিল।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে অন্য আরেক বিজেপি নেতার পরিবার স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের কার্ড নিয়েছিল। ঝাড়গ্রাম বিজেপি সভাপতি সুখময় শতপথীর পরিবারে নেতার বাবা মা ও বোন প্রায় আড়াই ঘণ্টা লাইন দিয়ে ঝাড়গ্রাম ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের দুয়ারে সরকার ক্যাম্প থেকে তাদের স্বাস্থ্য সাথী কার্ড গ্রহণ করে। এছাড়াও ওই নেতার জেঠু জেঠিমা স্বাস্থ্য সাথী কার্ড করায়। ঘটনাটির সম্বন্ধে প্রবল বিতর্ক সৃষ্টি হয় বিজেপি অন্দরে। কিন্তু বিজেপি নেতা বলেছেন, “এটা রাজ্যের প্রকল্প। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যক্তিগত কিছু নয়। আর আমার পরিবারের লোকেরা কার্ড নিয়েছে যাতে দেখা যায় মমতার দাবির সত্যতা কতটা। মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতা থাকলে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু করুক।”