আসন্ন বাংলা বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলি পূর্ণ উদ্যমে তাদের ভোট জয়ের উদ্দেশ্যে প্রচার করতে মাঠে নেমে পড়েছে। কিন্তু নির্বাচনের প্রাক্কালে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস দলবদল ইস্যুতে বেশ অস্বস্তিতে আছে। কারণ এর আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) যখন রাজ্যে এসেছিলেন তখন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary) সহ একঝাঁক তৃণমূল নেতা বিজেপিতে গিয়ে যোগদান করেছিল। এমনকি তারপর থেকে মাঝেমাঝেই এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। আবারো চলতি মাসের ৩০ তারিখে রাজ্যে আসছেন অমিত শাহ। তাহলে আবারো কি তৃণমূল শিবিরে দলবদলে ঢল নামবে?
অবশ্য তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বিধানসভা নির্বাচনের আগে শাসক দলের হাল ধরতে ২৯ জানুয়ারি তৃণমূল ভবনে দলের সাংসদদ ও বিধায়কদের নিয়ে একটি জরুরি বৈঠক আয়োজন করেছেন। বঙ্গ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন অমিত শাহের ফের বাংলা সফরে আসার আগের দিনে মুখ্যমন্ত্রীর এই বৈঠক রাজনৈতিক দিক থেকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ হবে। তিনি যেহেতু দলের সমস্ত সাংসদ ও বিধায়কদের এই বৈঠকে উপস্থিত থাকার আদেশ দিয়েছেন সেই অনুযায়ী ধরে নেওয়া যেতে পারে হয়তো এই বৈঠক দলবদল ইস্যু সমাধানের জন্য করা হচ্ছে। সেই সাথে দু’দিন আগে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের জনসভায় দাঁড়িয়ে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছিলেন, “যারা দল থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন তারা চলে যেতে পারেন। পড়ে গেলে ট্রেন মিস হয়ে যেতে পারে।”
প্রসঙ্গত এতদিন ধরে তৃণমূলের দলবদল হলে দলের পক্ষ থেকে তেমন কঠোর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হতো না। তবে এবার হয়তো তৃণমূল কংগ্রেস দলবদল ইস্যু নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে। এতদিন ধরে অনেক তৃণমূল নেতা মন্ত্রীর গলায় দলের বিরুদ্ধে সুর শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু সম্প্রতি ঘাসফুল শিবির শীর্ষ নেতারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন দল বিরোধী কথাবার্তা বরদাশ্ত করা হবে না। আর যেমন বলা ঠিক তেমন কাজ হয়েছে। কিছুদিন আগেই বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়াকে দল বিরোধী কাজ করার জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়াও দীর্ঘদিনের বেসুরো উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষালকে গতকাল শোকজ করেছে দল। এছাড়াও নদীয়া জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় কে পদ থেকে অপসারণ করেছে দল। এই কার্যকলাপের মাঝে এটা স্পষ্ট যে তৃণমূল কংগ্রেস দলবদল ইস্যু বা দলের প্রতি বেসুরো হওয়াকে বরদাস্ত করবে না।