‘সমালোচনা তো অনেক হল’, এবার ‘বেসুরো’ রাজীব বন্দোপাধ্যায়
বিজেপির সঙ্গে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়-র সখ্যতা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে বলে সূত্রের খবর।
ভোটের আগে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যাবার সময় শিরোনামে উঠে এসেছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে তার উপরে বেশ খানিকটা ভরসা করেছিল গেরুয়া শিবির। কার্যত হাওড়া জেলায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এর উপরেই নির্ভর করে ছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু হাওড়া জেলা তো দূরের কথা, তিনি নিজের কেন্দ্রই ধরে রাখতে পারলেন না। তারপর থেকেই কেমন যেন বিজেপি থেকে দূরে সরে আসতে চাইছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি শোনা যাচ্ছে তিনি নাকি বিজেপির সঙ্গে খুব একটা বেশি সখ্য রাখছেন না। এমনকি আজকে তিনি দিলীপ ঘোষের ডাকা বৈঠকেও উপস্থিত ছিলেন না। এছাড়াও শোনা যাচ্ছে নাকি তিনি সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে আবার যোগাযোগ করা শুরু করেছেন।
এরকম পরিস্থিতিতে যখন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে রাজনৈতিক টালমাটাল চলছে, সেই মুহূর্তে তিনি একটি নতুন পোস্ট করে তৃণমূল কংগ্রেসে ফেরার জল্পনা আরো উস্কে দিলেন। এটি টুইটার পোস্টে তিনি লিখলেন, “সমালোচনা তো অনেক হলো…” কার্যত এই পোস্টে তিনি সরাসরি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষ করে বারংবার ৩৫৬ ধারার বুলি আওড়ানো থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
স্বভাবতই, এখনো পর্যন্ত না রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, না বিজেপি সদরদপ্তরের তরফ থেকে কোনরকম বক্তব্য শুনতে পাওয়া গেছে। কিন্তু রাজিবের এই পোস্টের পর স্পষ্ট যে, ভারতীয় জনতা পার্টিতে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় পুরোপুরি বেসুরো গাইতে শুরু করেছেন। কিন্তু রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এর এই বেসুরো মনোভাবের কারণ আছে। যখন ২১’ বিধানসভা নির্বাচনের জন্য বিজেপির বাহিনী তৈরি হচ্ছিল সেই সময় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন বিজেপির অন্যতম সৈনিক। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর সমস্ত লাইমলাইট গিয়ে পড়েছে শুভেন্দু অধিকারীর উপরে। সেখানে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় একেবারেই ব্রাত্য। আর এই বিষয়টি তিনি মেনে নিতে পারছেন না। শুধু তিনি নয় অনেক বিজেপি নেতা মন্ত্রীরা হেরে গিয়েছেন, তারা এখনো সম্মান পেলেও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে যোগ্য সম্মান দেওয়া হচ্ছে না দলের তরফ থেকে। সম্ভবত এই কারণেই তার বেসুরো মনোভাব। আর, এই মনোভাবের মূল প্রেক্ষাপটে যিনি অর্থাৎ শুভেন্দু অধিকারী, তার বিরুদ্ধেই এদিন টুইটারে কটাক্ষের বর্ষণ করলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শুভেন্দু অধিকারী এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করে বাংলার ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলেছেন। তার পাশাপাশি, অমিত শাহ এবং শুভেন্দু অধিকারীর মধ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি নিয়েও কথা হয়েছে বলে খবর। বৈঠক থেকে বেরিয়ে রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করলেন শুভেন্দু অধিকারী। তুলে আনলেন ৩৫৬ ধারা জারি করার প্রসঙ্গ। মমতা বন্দোপাধ্যায়ের তীব্র কটাক্ষ করলেন শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর এই মন্তব্যের পরেই গণমাধ্যমে কার্যত জ্বলে উঠলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সাথে করে নিয়ে দল ত্যাগ করা দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।