তৃতীয়বার বাংলা জয়ের পর এবার তৃণমূল কংগ্রেসের পাখির চোখ ত্রিপুরা। নভেম্বরের শেষে পুরভোট ত্রিপুরায়। আর তাই ঘন ঘন পড়শি রাজ্যে হাজির হচ্ছে তৃণমূলের বড় বড় নেতারা। এর মধ্যেই বহুবার আক্রমণেরও হতে হয়েছে এই রাজ্যের শাসকদলকে। এবার পুলিশি ঝামেলায় এই রাজ্যের যুব তৃণমূল সভাপতি সায়নী ঘোষ। সোমবার ভোট প্রচারে ত্রিপুরা এসেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
তবে অভিষেকের আসার আগে এখানে ভোটের লড়াইয়ের জন্য ঘাঁটি গেড়েছেন সায়নী, কুণাল ঘোষ, সুস্মিতা দেবরা। ত্রিপুরায় সকলেই রয়েছেন পোলো টাওয়ার হোটেলে। রবিবার সক্কাল সক্কাল হোটেলে হানা দেয় সেখানকার স্থানীয় পুলিশরা। সেখান থেকে তৃণমূল নেত্রী সায়নী ঘোষকে আগরতলা পূর্ব মহিলা থানায় নিয়ে আসা হয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। কি অভিযোগ যুবনেত্রী সায়নী ঘোষের বিরুদ্ধে? কিছুদিন আগে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের বিষয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার তৃণমূল নেত্রীকে আগরতলা পূর্ব মহিলা থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে।
ত্রিপুরার "মুখ্য" মন্ত্রীর সভায় হাতে গুনে ৫০ জন লোক। এর থেকে বেশি আমাদের ক্যান্ডিডেটদের সভায় দেখা যাচ্ছে। ত্রিপুরার মা-মাটি-মানুষের সমর্থনে চোখে চোখ রেখে খেলা হবে ও বিজেপির গুন্ডারাজের অবসান ঘটবে।
পুনশ্চ: গাড়ি কিছুটা আঘাত প্রাপ্ত কিন্তু আমি, @aitcsudip, @ArpitaGhoshMP অক্ষত। pic.twitter.com/3ryJyFfXIf
— Saayoni Ghosh (@sayani06) November 20, 2021
এদিকে সায়নীকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনতে ছুঁটে এসেছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুনাল ঘোষ, তৃণমূল কংগ্রেস দলের মহিলা সাংসদ সুস্মিতা দেব, ত্রিপুরা প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেস দলের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য সুবল ভৌমিক সহ অন্যান্যরা। এরপরেই সকলের প্রশ্ন হয় সায়নীকে আটক করার জন্য আইনি নোটিস কোথায়? প্রশ্ন তাঁদের। তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আগরতলা পূর্ব মহিলা থানার সামনে বিজেপির কর্মীরা তৃণমূল কর্মীদের উপর আক্রমণ চালায়। বাইক ভাঙচুর করে। এমনকি থানার ভেতরে ও ঢিল ছোড়া হয়। এতে আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন তৃণমূল কর্মী।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আগরতলা পূর্ব থানার সামনে রীতিমত রণক্ষেত্র পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। পুরভোটের আগে ত্রিপুরায় এখন উত্তেজনা তুঙ্গে। আক্রমণাত্মক পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিশাল পুলিশবাহিনী এবং টিএসআর বাহিনী। মোতায়েন করা হয়েছে সি আর পিএফ জওয়ানদের। থানায় দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসবাদ করার পর বিকেল চারটে নাগাদ আগরতলা পুলিশ গ্রেফতার করলেন তৃণমূল নেত্রী সায়নী ঘোষকে। মেডিক্যাল টেস্টের জন্য তাঁকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এদিন তৃণমূল নেত্রী সুস্মিতা দেব জানান, পুলিশ দাবি করছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের সভার পাস দিয়ে যাওয়ার সময় জোরে গাড়ি চালিয়ে মানুষকে মারার চেষ্টা করেছিলেন। এদিন তিনি আরও বলেন, জোরে গাড়ি চালিয়ে মানুষ মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন সায়নী, এই কথা বিশ্বাস করবে না। পুরোটাই মিথ্যে রটনা। তৃণমূলকে ভয় দেখানোর জন্য এটা করা হয়েছে। এছাড়াও সোমবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আসছেন। তাঁর কর্মসূচি নষ্ট করার জন্য এসব করা হয়েছে। ওরা যতই এই ধরনের মিথ্যে মামলা করুক না তারা যে লড়াইয়ের জন্য এসেছে সেই জমি এত সহজে ছাড়বেন না।