নির্বাচনের সময় ‘গোপনে’ তৃণমূলের কাজ করতাম, দলে ফেরার আর্জি জানিয়ে সরব প্রাক্তন মন্ত্রী
সোনালী এবং সরলার পর বিজেপি থেকে দলে ফেরার চেষ্টা করছেন বাচ্চু হাঁসদা
একুশে বাংলা বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল দল থেকে সারি সারি প্রথম পর্যায়ের নেতাদের দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করা ঘটনা খুবই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছিল। এমনকি অনেক মন্ত্রী দল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে যোগদান করে তাদের নতুন উজ্জল রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করার স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু ভোটের ফলে সেই স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেছে। বাংলার মানুষ বাংলার মেয়েকেই তৃতীয়বারের জন্য বাংলার মসনদে বসিয়েছে। এবার সম্প্রতি গেরুয়া শিবির থেকে তৃণমূল দলত্যাগী নেতা নেত্রীরা দলে ফেরার আর্জি জানিয়ে খবরের শিরোনামে আসছেন। কিছুদিন আগেই সাতগাছিয়া প্রাক্তন বিধায়ক সোনালী গুহ সর্বসমক্ষে তৃণমূলে ফেরার আবেদন জানিয়ে টুইট করেছিলেন।
সোনালী গুহের পথেই হাঁটতে দেখা গিয়েছিল সরলা মুর্মু ও অমল আচার্যকে। তবে এবার তৃণমূলের ফিরতে চাইছেন প্রাক্তন মন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা। আসলে বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে ক্ষোভে দল ছেড়েছিলেন তিনি। তৃণমূলের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন তিনি। কিন্তু তার বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় বিজেপির নির্বাচনী কাজে সক্রিয়ভাবে বাচ্চুকে কাজে লাগায়নি তারা। তার ফলেই তার নতুন রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরুর স্বপ্ন চুরমার হয়ে যায়। মোহভঙ্গ হতেই দলে ফিরতে চেয়ে বার্তা দেন তিনি। কিন্তু তাকে আর জেলা বা রাজ্য নেতৃত্ব দলে ফেরায়নি।
বাচ্চু হাঁসদা দাবি করেন যে তিনি নির্বাচনের সময় গোপনে তৃণমূলের হয়ে কাজ করছিলেন। এই বিষয়ে তিনি বলেছেন, “আমায় তখন দলে নিলে সক্রিয়ভাবে প্রচার করতে পারতাম। গোপনে যেটুকু সাহায্য করেছি তাতেই ভালো ফল করেছে তৃণমূল। যদি আমায় দলে নিত তাহলে তপন, গঙ্গারামপুর ও বালুরঘাট আসনটি হাতছাড়া হতো না। যদি আমাকে এখন দলে ফিরিয়ে দেয় তাহলে পুরোদমে কাজ করব।” অন্যদিকে বাচ্চুর এমন আর্জি শুনে তৃণমূল কর্মীরা বলেছেন, “বাচ্চুর বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। লোকসভার আসনটি তার জন্যই তৃণমূলের হাতছাড়া হয়েছিল। তাই সেই জায়গায় বাচ্চুর বদলে কল্পনা কিস্কুকে ভোটে দাঁড় করিয়ে মাত্র ৪২০০ ভোটে হেরেছে দল।” এই কথায় একপ্রকার স্পষ্ট যে তৃণমূল হয়তো আর বাচ্চুকে দলে ফিরিয়ে আনবে না।
এই প্রসঙ্গে সৌগত রায় জানিয়েছেন, “দলের দুর্দিনে তা থেকে যারা নিজেদের আখের গোছাতে বিজেপিতে গিয়েছিলেন, তাদের আর দলে নেওয়া হবে না।” এবার বাচ্চুকে দলে নেওয়া হবে নাকি সেই নিয়ে চরম বিতর্ক চলছে তৃণমূলের অন্দরমহল। তবে তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান তথা কৃষি বিপণন মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র বলেছেন, “এই বিষয়টি পুরোপুরি রাজ্য নেতৃত্বের উপর নির্ভর করছে।”