মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আক্রমণ, জায়গায় জায়গায় বিক্ষোভ প্রদর্শন তৃণমূল কর্মীদের
বিরুলিয়ায় হলো টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ, বিজেপি কর্মী এবং তৃণমূল কর্মীদের খণ্ডযুদ্ধে উত্তপ্ত পরিস্থিতি
গতকাল নন্দীগ্রামে জনগণের সাথে কথা বলার সময় আহত হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা দাবি করেন ৪-৫ জন মানুষ তাকে ধাক্কা মেরেছে এবং ফেলে দিয়েছে। ঘটনাটি ঘটে নন্দীগ্রামের বিরুলিয়া বাজারে। আজ সকালে ঘটনাস্থলে গিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক বিভু গোয়েল এবং পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশ। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন ভিড় থাকার কারণে কিছু দেখা সম্ভব হয়নি। পুলিশ সুপার এবং জেলাশাসকের ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর নন্দীগ্রামে বিরুলিয়া বাজারে সৃষ্টি হয় উত্তেজনা। বিজেপি এবং তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। একদিকে তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ বিজেপির গুন্ডারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে মেরেছে। অন্যদিকে বিজেপির অভিযোগ শুধুমাত্র তৃণমূলের পোতা খুঁটিতে মুখ্যমন্ত্রী চোট পেয়েছিলেন।
অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর হামলার অভিযোগে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে পথ অবরোধ শুরু হয়ে যায়। দুর্গাপুর মুচিপাড়া এবং অন্ডালে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক করে বিক্ষোভ দেখানো হয়। আসানসোলের হটন রোডে টায়ার জ্বালিয়ে জি টি রোড বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখাবে তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। বর্ধমান কালনা রোডেও টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করা হয়। শক্তিগড় থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
সকালে বাঁকুড়া রানীগঞ্জ ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন তৃণমূল কর্মীরা। সেখানেও বিক্ষোভ দেখানো হয় টায়ার জ্বালিয়ে। নন্দীগ্রামের হাজরা কাটায় তৃণমূল বিক্ষোভ মিছিল বের করে। তৃণমূল নেতা শেখ শাহাবুদ্দিন এর নেতৃত্বে রাজারামচক থেকে এই মিছিল বের হয়। দেগঙ্গার বিধায়ক রহিমা মন্ডলের নেতৃত্বে টাকি রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ করা হয়। হাবরা নৈহাটি রোডে বেঞ্চ পেতে অবরোধ চলে। আমডাঙা থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
শুভেন্দু অধিকারী যাওয়ার আগে গড়চক্রবেরিয়াতে বিরোধিতা করেন তৃণমূল কর্মীরা। হাসনাবাদ শিয়ালদা শাখার কড়েয়া কদম্বগাছি স্টেশনে বিক্ষোভ করা হয়। এর জেরে হাসনাবাদ এবং বসিরহাট লাইনে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। সাথেই বারাসাত লাইনের ট্রেনের সমস্যা হয়। ঘন্টাখানেক পর পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে। গোপালনগরে গভীর রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ দেখান সেখানকার তৃণমূল কর্মীরা। কলকাতাও বাদ যাচ্ছেনা, রাত ১০ টা নাগাদ চেতনা সেন্ট্রাল রোড অবরোধ করে তৃণমূল কর্মীরা বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। এই মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কন্যা সাবা হাকিম।
রাজ্যের জায়গায় জায়গায় তৃণমূল কর্মীরা অভিযোগ করছেন, বিজেপি কর্মীরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধাক্কা দিয়েছেন। অন্যদিকে বিজেপি কর্মীদের অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীকে ধাক্কা দেওয়া হয়নি। তিনি তার ভুলবশত পড়ে গিয়েছেন। আজ সকালেই দুজন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তারা দুজন প্রত্যক্ষদর্শী এবং তারা দেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেউ ধাক্কা মারেনি।