এবার তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন আরও এক তৃণমূল বিধায়ক। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকে তিনি আজ সকালে লিখলেন, ” আমার দল আর আমার নেত্রীর হাতে নেই, অর্থাৎ এই দল আর আমার নয়, হতে পারে না। তাই এই দলের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করাটা কি স্বাভাবিক নয়?” মঙ্গলবার সকালে এরকম ভাষাতেই তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করলেন কোচবিহার দক্ষিনের তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী। বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এরকম মন্তব্য করে তিনি বুঝিয়ে দিলেন তিনি আর দলের সেনানী নয়। এই পোস্ট ঘিরে ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় চরম গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
ইতিমধ্যেই এই পোস্ট বেশ ভাইরাল এবং এই পোস্ট ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব এই বিষয়টিকে সম্পূর্ণরূপে কাকতালীয় বলে দাবি করছে। মিহির গোস্বামী বলেন,”দলের সংগঠন থেকে আমার অব্যাহতি নেওয়ার ঘোষণা করার পর ছয় সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। এই ৪৩ দিনে আমি দলের সমস্ত কাছের মানুষ থেকে এক বা একাধিক ফোন কল পেয়েছি, তাদের সাথে কথা বলেছি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী একবারও আমাকে ফোন করেননি। কোন বরখাস্ত নামা অথবা বহিষ্কারের নির্দেশও আসেনি তার কাছ থেকে। এর থেকেই স্পষ্ট দলের ক্ষমতা আর দলনেত্রীর হাতে নেই।”
যদিও মিহির বাবু এই প্রথম নয়, এর আগেও দলের অন্দরে অস্বস্তির সৃষ্টি করেছেন। তিনি বহুবার তৃণমূলকে অস্বস্তিতে ফেলে দল ছাড়ার জল্পনা উসকে দিয়েছিলেন। কিন্তু এবার তার এই ফেসবুক পোস্ট নিয়ে শাসক দলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপির রাজ্য নেতৃত্তের মুখেরা। তাদের দাবি, যদি তৃণমূল নেতা বিজেপিতে যোগ দিতে চান তাহলে তিনি নির্দ্বিধায় যোগ দিতে পারেন।
এই তৃণমূল নেতা এদিন আরও লিখেছেন, ” বহুকাল পরে এবার এক নিষ্প্রভ দীপাবলি দেখে মন বিষণ্ন হয়েছিল। তেমনি ভেবে বিস্মিত হয়ে যাই, দলের অভিধানে সম্মান শব্দটি অনুপস্থিত। দীর্ঘ ২২ বছর কাটিয়ে দিলাম এই দলে, কিভাবে সম্ভব হলো তা অনেক সময় প্রশ্ন উঠে আসে। তখন মনে হয় উত্তর একটাই, দিদি! দলের ভেতর অনেক অপমান সহ্য করেও থেকে গিয়েছি অকারনে। কিন্তু শুধুমাত্র দিদির বিশ্বাস এবং আস্থাতেই এতদিন টিকে ছিলাম।
কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, এই দল আর আমার দিদির নয়। দিদি এখানে নিস্পৃহ। তাই দিদির লোক এখানে অপ্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বহীন। যো হুজুর বলে টিকে থাকতে পারলে থাকো, না হয় বেরিয়ে যাও। কালিপুজোর সময় আমার এই ধারণা আরো সুদৃঢ় হয়েছে”।