ঋদ্ধিমান রায়: সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পরের দিন থেকেই মৃত্যু রহস্য নিয়ে জটিলতা তৈরি হয় দেশ জুড়ে। মুম্বই পুলিশ আত্মহত্যার কথা বললেও একফোঁটাও ধোপে টেকেনি সেই তত্ত্ব। বরং সিবিআই তদন্তের দাবি তুলে কেন্দ্রের উপর ক্রমাগত চাপ তৈরি করতে থাকেন সুশান্ত সিংয়ের পরিবারের একাংশ ও ভক্তেরা।
মামলা মুম্বই পুলিশের পর বিহার পুলিশের হাতে আসায় সুশান্ত সংক্রান্ত বেশ কিছু অজানা তথ্য সামনে আসে। ইতিমধ্যে একটি জনপ্রিয় সংবাদ সংস্থাও তাদের ব্যক্তিগত তদন্তের মাধ্যমে সুশান্তের মৃত্যু সংক্রান্ত আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামনে এনেছে। রিহা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে কেস ফাইল করে সিবিআইও।
এমন পরিস্থিতিতে সুশান্তের ২০১৮-১৯ এর ডায়েরি থেকে উদ্ধার হল আরো গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য, যা নিঃসন্দেহে তাঁর মৃত্যু রহস্য উদ্ঘাটনে বিশেষ ভূমিকা নিতে চলেছে।
২০২০ সালে সুশান্তের হলিউডে পা রাখার স্বপ্ন ছিল বলে জানা যাচ্ছে তাঁর ডায়েরি থেকে। তৈরি ছিল বছরে ৫০ কোটি টাকা রোজগারের লক্ষ্যমাত্রার ব্লুপ্রিন্ট। শুধু তাই নয়, ডায়েরির তৃতীয় পাতায় ছিল এ সংক্রান্ত বিস্তারিত পরিকল্পনা। ছিল বিদেশী লেখক এবং পরিচালকদের নিয়ে প্রোডাকশন হাউস তৈরি করার ইচ্ছা। পাশাপাশি ভেবেছিলেন লিগাল টিম তৈরির কথাও। কাজে সহায়তার জন্য টিমের প্রধান করতে চেয়েছিলেন তাঁর আইনজীবী বোন প্রিয়াঙ্কা আর মেঘাকে। লস এঞ্জেলসে বাড়ি করার কথাও উঠে এসেছে ডায়েরির পাতা থেকে। অন্যদিকে, সুশান্তের জীবনে রিহা চক্রবর্তীর আগমনের পর তাঁর জীবনে নানারকম অসংলগ্নতা ও অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল, তারও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রমাণ ছড়িয়ে রয়েছে ডায়েরির পাতায়।
সুশান্তের এই ডায়েরি উদ্ধার তাঁর মৃত্যু রহস্য তদন্তের পক্ষে অত্যন্ত সহায়ক হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বস্তুত, সুশান্তের এই আকাশছোঁয়া স্বপ্ন দেখে কোনোভাবেই তাঁকে হতাশাগ্রস্ত মনে করা সম্ভব নয়, বরং এইসব স্বপ্নের পরিকল্পিত ব্লুপ্রিন্ট ছকে রাখা তাঁর আশাবাদী মানসিকতারই প্রমাণ দেয়।
এরই সঙ্গে ডায়েরির ব্যাপারে মুম্বই পুলিশের নিশ্চুপ ভূমিকা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ এত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মুম্বই পুলিশ কীভাবে বেমালুম চেপে গেল তা যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ তৈরি করছে।