দীর্ঘদিন ধরে বঙ্গ রাজনীতি সরগরম হয়ে আছে শাসক দলের সাথে অধিকারী পরিবারের দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে। কিছুদিন আগেই তৃণমূল বিদ্রোহী নেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary) তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন। তাছাড়াও তার ভাই সৌমেন্দু অধিকারী (Soumendu Adhikary) বিজেপিতে যোগদান করেন। তারপর থেকেই বঙ্গ রাজনীতিতে জল্পনা চলছিল শিশির অধিকারী (Sisir Adhikary) কি করবেন? তবে গতকাল জল্পনার অবসান ঘটিয়ে শাসকদল শিশির অধিকারীকে দীঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারিত করেছিল। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। তারপর পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সভাপতির পদ থেকে সরানো হয় শিশির অধিকারীকে।
প্রথম থেকে শিশির অধিকারী বলে আসছিলেন তিনি দল ছাড়বেন না। কিন্তু এমন পরিস্থিতির ২৪ ঘন্টার মধ্যেই কার্যত অন্য সুর শোনা গেল শিশির অধিকারীর গলায়। তিনি তার বক্তব্যের মাধ্যমে আরও বিজেপিতে যোগ দেয়ার সম্ভাবনা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন। তিনি এদিন বলেছেন, “অনুগামীদের সাথে কথা বলে এরপর কি করবো তা ঠিক করব আমি। আমার কাছে সমস্ত দরজায় খোলা আছে। কোন সম্ভাবনাই এই মুহূর্তে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।”
এছাড়াও শাসকদল শিশির অধিকারীকে অপসারণ করার পর বারবার শিশিরবাবুর শারীরিক অসুস্থতার তত্ত্ব খাটিয়েছে। শিশির অধিকারী সম্বন্ধে কিছু দিন আগে তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ বলেছেন, “শিশিরবাবু বয়স হয়েছে। ওনার ছোটাছুটি করতে খুব অসুবিধা হচ্ছিল। তাই এটা প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত।” এছাড়াও পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেছেন, “দীর্ঘদিন এক পদে থাকার পর তার রদবদল হয়। এটা সংসদীয় গণতন্ত্রের এক প্রথা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভায় আমার অনেকবার দপ্তর বদল হয়েছে। তানি আমি তো কখনো অপমানিত বোধ করিনি। আর অখিল গিরি তোমার কোন আমেরিকার নয়। ও দলের লোক।”
তবে এতদিন চুপ থাকার পর শেষ পর্যন্ত জবাব দিয়েছেন শিশির অধিকারী। তিনি বলেছেন, “আমি কোন জড় বস্তু নয় যে আমাকে যেখানে খুশি ফেলে রাখা হবে। আর আমার এখনো যা ফিটনেস আছে তাতে আমি ১৩০ বছর অব্দি বাঁচতে পারব।” স্বভাবতই বোঝা যাচ্ছে শাসক দলের সিদ্ধান্তে একদমই খুশি হননি শিশির অধিকারী। তারপর তার আজকের বক্তব্যের পর তার বিজেপিতে যোগদান শুধু সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে হচ্ছে।