একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছিলেন রাজীব ববন্দোপাধ্যায় । এরপর নিজের কেন্দ্র ডোমজুর থেকেই বিজেপির হয়ে এবারে ভোটের লড়াই করেন। তৃণমূলে হয়ে ২০১৬ সালে বিপুল ব্যবধানে জিতলেও ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির হয়ে লড়াইয়ে গোঁ হারান হেরে যান। তারপরই এবছর বিধানসভা ভোটে মমতার অভূতপূর্ব জয়। আর পুরোনো রেকর্ড ভেঙে বিজেপিকে গোল দিয়ে বাংলার শাসনভার নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। এরপরই বিজেপির কোনও সভাতেই সেইভাবে দেখা যায়নি রাজীবকে। উল্টে প্রকাশ্যে দিদির প্রশংসা করে বিজেপিকে আক্রমণ করেন। তখন থেকে রাজীবের তৃণমূলে যোগ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল। অবশেষে গতকাল ত্রিপুরায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় তৃণমূলে ফিরলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রীর এই ঘর ওয়াপসিতে মোটেও খুশি নন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর প্রশ্ন, ‘টপ টু বটম একজন দুর্নীতিগ্রস্ত লোককে কেন জয়েন করানো হল?’
ত্রিপুরায় রবিবাসরীয় সভা থেকেই নিজের প্রাক্তন দল বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়াতে শুরু করেছেন রাজীব। জানিয়েছেন, বিজেপিতে যোগ দেওয়া তাঁর ভুল কাক ছিল। তিনি ত্রিপুরার সভায় প্রশ্ন তুলেছেন ডবল ইঞ্জিন সরকারের ভুমিকা নিয়ে। তবে এত বিরোধিতা করা সত্ত্বেও তাঁর দলে আসা এক্কেবারে না পছন্দ। শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায় যে দলের এই সিদ্ধান্তে খুশি নন। তা জানিয়ে দিয়েছেন নিজেই।
সংবাদমাধ্যমের সামনেই তিনি প্রকাশ্যে বলেন, ‘ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে যে জয়েন করানো হয়েছে, তা আমাদের মেনে নিতে হবে। কিন্তু মমতাদি নির্বাচনী মিটিংয়ে ডোমজুড়ে বলেছিলেন যে, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের তিন-চারটে বাড়ি আছে গড়িয়াহাটে। অর্থের লেনদেন চলছিল দুবাইতে। তা সত্ত্বেও তাঁকে কেন নেওয়া হল সেটা শীর্ষ নেতৃত্ব বলতে পারবে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন যে, দলের কোনও কর্মীর মনে আঘাত দিয়ে কোনও বিশ্বাসঘাতককে ফেরত নেওয়া হবে না। আমিও এক দলীয় কর্মী। তাই এখন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কেউ কথা রাখেনি কবিতাটা মনে পড়ছে।’
এরপরই কল্যাণ প্রশ্ন করেন, ‘আমি জানি না এরকম টপ টু বটম দুর্নীতিবাজ লোককে কেন জয়েন করানো হল?’ উল্লেখ্য, বঙ্গ রাজনীতিতে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় দুই বড় নাম। অনেকেই মনে করেন, তাদের দু’জনের সম্পর্ক বেশ অম্লমধুর। কেউ কারুর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কিছু না বললেও তাদের সম্পর্কের তিক্ততা মনোভাব দলের ভিতরের অনেকের মাথাব্যথার কারণ ছিলই। এবার সেই ঠান্ডা লড়াই এবার প্রকাশ্যে এল। এবার রাজীবের তৃণমূলে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে সরাসরি প্রশ্নই তুলে দিলেন আইনজীবী সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।