নয়াদিল্লি: সারদা-নারদার গল্প এখন অতীত, তৃণমূল (TMC) ত্যাগ করে একাধিক নেতা-নেত্রী সাজিয়ে তুলেছেন পদ্মবন। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে এক সময়ে ঘটা করে সাংবাদিক সম্মেলনে প্রকাশ করা নারদার স্টিং ভিডিও নিজেদের ইউটিউব (YouTube) চ্যানেল থেকে উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি (BJP)। সারদা বা চিটফান্ড প্রতারণা নিয়ে যে সমস্ত তৃণমূল নেতা-নেত্রীদের দিকে আঙুল তুলত বিজেপি তারাও এখন পদ্মতলে নিশ্চিন্তে দিনযাপন করছেণ। তাই বঙ্গজয়ে নতুন প্রতিশ্রুতি সামনে আনল বিজেপি।
গতকাল জানা গিয়েছিল, পার্শ্ব শিক্ষকদের সব দাবি ক্ষমতায় এসে সাত দিনের মধ্যে মিটিয়ে দেবে বিজেপি সরকার। আর আজকে এল আরও বড় এক প্রতিশ্রুতি। বিজেপি রাজ্যের ক্ষমতায় এলে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে তদন্ত করবে। অগস্ট মাসের মধ্যে গঠিত হবে সেই কমিশন। দিলীপ ঘোষ কে পাশে বসিয়ে এই ঘোষণা করলেন শমীক ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, “প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের জন্য সদ্য প্রকাশিত মেধা তালিকা ত্রুটিপূর্ণ। এর পিছনে বড় মাপের দুর্নীতি হয়েছে। তৃণমূল ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার ঠিক আগেও একতা দূর্নিতী করে গেল!”
শমীক প্রতিশ্রুতি দেন, “ক্ষমতায় এসেই আমরা এই দুর্নীতির তদন্তে একটি কমিশন গঠন করব!” কিন্তু শমীকের কথা কতটা বিশ্বাসযোগ্য? শমীক ভট্টাচার্য, শিক্ষিত, মার্জিত মুখপত্র। কিন্তু অনেক কিছু তাকেও মুখ বুজেই সইতে হয়। উদাহরন? বঙ্গ বিজেপিতে যদি সথে উৎকৃষ্ট তাত্বিক, যুক্তিবাদী নেতা কেউ থেকে থাকেন তিনি শমীক। কিন্তু সেই শমীক ভট্টচার্য কে বরাহ নন্দনের চলতি ভাষায় গালাগাল দিতে দিতে তেড়ে যাওয়া অর্জুন সিং এখন শমীকের থেকেও বড় বিজেপি নেতা!
এবার একটু বিজেপির প্রতিশ্রুতির ইতিহাসে তাকানো যাক। সময়টা ২০১৬ সাল, বিজেপি পার্টি অফিসে ঘটা করে প্রকাশ করা হল নারদা স্টিং অপরেশন এর ভিডিও, যদিও এখনো পর্যন্ত তার র’ ফুটেজ উদ্ধার হয়নি। ভিডিওর আগে, পিছে কি আছে তারও কোন খবর নেই। শোনা যাচ্ছিল নারদা কর্তাই নাকি জেলে যাবেন, কিন্তু তাও হলনা। গতবছর এস এম মির্জা কে ভোটের পরে গ্রেফতার করা হল, কিন্তু প্রমান অভাবে তাকেও ছেড়ে দিতে হয়েছে সিবিআই কে। অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে তাদের মধ্যে অন্যতম বর্তমানে মুকুল রায়, শোভন চট্টোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী, শঙ্কুদেব পণ্ডারা বিজেপির বড়বড় নেতা। যাদের জেলে ভরার দাবি তুলত বিজেপি তাঁরা এখন y z নানা রকমের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পান! তাই বাধ্যতামূলক ভাবেই বিজেপির ইউটিউব থেকে উড়িয়ে দিতে হয়েছে নারদের ভিডিও!
আর একটু ফ্ল্যাসব্যাকে যাই, ২০১৯ লোকসভা ভোটের আগে মেয়ো রোডের সভা থেকে চিটফান্ড নিয়ে হুঙ্কার দিয়েছিলেন অমিত শাহ। বিজেপি ক্ষমতায় এলে ৯০ দিনের মধ্যে নাকি সবাইকে জেলে ভরবেন ওনারা এমন প্রতিশ্রুতি ও দেওয়া হয়েছিলো। ক্ষমতায় এসে দেড় বছর হয়ে গেলেও কিছুই হয়নি। মাঝে অবশ্য কদিন রাজীব কুমারের পিছনে ছুটে লুকোচুরি খেলা হল, আদালতে যাওয়া হল, বয়ান রেকর্ডিং হল। কিন্তু তারপর কি হল কেউ জানেনা! নোটবন্দি, জিএসটি পেট্রোলের দাম নাহয় ছেড়েই দিলাম… তাই প্রশ্নটা থেকেই যায়… বিজেপির প্রতিশ্রুতি কিনা!