ভারতের দৈনন্দিন লেনদেনের অন্যতম মুখ্য মুদ্রা ৫০০ টাকার নোট। কিন্তু শীঘ্রই এই নোট তুলে নেওয়া হতে পারে—এমনই জল্পনা ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (RBI)-এর সাম্প্রতিক নীতিগত পরিবর্তন এবং রাজনৈতিক মহলের কিছু মন্তব্যের পর এই প্রশ্ন আরও জোরালোভাবে উঠছে।
৫০০ টাকার নোটের দখল কতটা?
২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত তথ্য অনুযায়ী, বাজারে প্রচলিত মোট নোটের ৪০.৯ শতাংশই ৫০০ টাকার। শুধু তাই নয়, মুদ্রার মোট মূল্যের ৮৬ শতাংশ জুড়ে রয়েছে এই একটি মাত্র মূল্যমান। ফলে এটি দেশের অর্থনীতিতে এক মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। ইতিমধ্যেই RBI বন্ধ করে দিয়েছে ₹২, ₹৫ এবং ₹২০০০ টাকার নোট ছাপা। এর মধ্যে ₹২০০০ টাকার ৯৮.২ শতাংশ নোটই ব্যাঙ্কে ফেরত এসেছে, অর্থাৎ কার্যত এই নোট এখন বাজারে নেই।
জাল নোটের ভয় বাড়ছে
সাম্প্রতিক সময়ে জাল নোট সংক্রান্ত যে তথ্য উঠে এসেছে, তাতে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। ₹২০০ এবং ₹৫০০ টাকার জাল নোটের সংখ্যা বেড়েছে। অন্যদিকে ₹১০, ₹২০ এবং ₹২০০০ টাকার জাল নোটের পরিমাণ কমেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্ক সংকেত।
খরচ বেড়েছে মুদ্রণেও
২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ভারত সরকার নোট ছাপাতে খরচ করেছে ₹৬,৩৭২.৮ কোটি টাকা। এই অতিরিক্ত খরচও সরকারের ওপর আর্থিক চাপ সৃষ্টি করছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ডিজিটাল টাকার দিকে ঝোঁক
এর মধ্যেই RBI-এর ডিজিটাল মুদ্রা (e₹) গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে ৩৩৪ শতাংশ। এর মধ্যে ৮৪.৪ শতাংশই ₹৫০০ ডিজিটাল নোট। নগদের বদলে ডিজিটাল মাধ্যমের প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ বাড়ছে দ্রুত।
পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ
পুরনো ও ছেঁড়া নোটকে রিসাইকেল করে পার্টিকেল বোর্ড আসবাবপত্র ও ইন্টেরিয়র ডেকোর তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেছে RBI। এটি একটি পরিবেশবান্ধব এবং দীর্ঘস্থায়ী উদ্যোগ।
আধুনিকীকরণের পথে RBI
‘সা-মুদ্র’ (Sa-Mudra) নামের একটি প্রকল্প চালু করেছে RBI, যার মাধ্যমে মুদ্রার গুনগত মান যাচাই, গণনা এবং ট্র্যাকিং প্রক্রিয়া ডিজিটাল ও স্বয়ংক্রিয় করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক স্তরে তীব্র সুর
অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন. চন্দ্রবাবু নাইডু কেন্দ্রকে আহ্বান জানিয়েছেন ₹৫০০ টাকার নোট তুলে নেওয়ার জন্য। তাঁর মতে, এটি কালো টাকার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কার্যকর হতে পারে।














