শ্রেয়া চ্যাটার্জি – কুমারী প্রিয়াঙ্কা, স্কুল থেকে ফেরার পথে তার বাবার ফার্মে তাকে সাহায্য করতেন। প্রিয়াঙ্কার যে গ্রামে জন্ম সেই গ্রামে কোন ইলেকট্রিক নেই, পাকা রাস্তা নেই। রামপুরের এক গন্ডগ্রামে তিনি থাকেন। প্রতিদিন ৪০ জন ছাত্রছাত্রীকে তিনি পড়ান কিছু অতিরিক্ত টাকা পাওয়ার জন্য। নানান রকম বাধাবিঘ্ন কাটিয়ে ২৮ বছর বয়সে এসে প্রথমবারে চেষ্টাতেই ইউ.পি এস.সি পাস করলো।
রেজাল্ট বেরোনোর পর দুদিন পরে তিনি তার বাড়ির লোককে জানাতে পেরেছেন কারণ রামপুর থেকে দেরাদুন এর দূরত্ব ১৪৫ কিলোমিটার। তিনি দেরাদুনে থাকেন এবং তার পরিবার থাকেন রাখতে। তার বাবা দিওয়ান রাম গ্রামের উঁচু জায়গায় গিয়ে কোন সিগন্যাল পাওয়ার পরই শেষ পর্যন্ত জানতে পারেন তার মেয়ে ২৫৭ র্যাংক করেছে। শুনে আনন্দে তার দুচোখ ভরে জল এসেছিল।
প্রিয়াঙ্কা জানায় রামপুরে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়তেন। তারপরে রামপুর থেকে ১-২ কিলোমিটার দূরে টপরটিতে একটি বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। স্কুলের ছুটি হওয়ার পরে এসে তার বাবাকে বাবার ফার্মের কাজে সাহায্য করতেন। কারণ এটাই ছিল তাদের একমাত্র জীবিকা। দশম শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষা পাস করার পর তার শিক্ষক-শিক্ষিকারা তার মা-বাবাকে জানিয়েছিলেন এইবার ভাল পড়াশোনার জন্য তাকে আরো ভালো ইন্সটিটিউশনে ভর্তি হতে হবে।তারপরে তার বাবা-মা তাকে গোপেশ্বর এ নিয়ে যান সেখানেই একটি সরকারি কলেজে ভর্তি করে দেন সেখান থেকেই তিনি বি.এ পাস করেন। তারপর তিনি দেরাদুনে চলে আসেন সেখানেই তিনি একটি কলেজ থেকে ল পাস করেন।
তারপরও তার জীবনে এমন সাফল্য আসে। তিনি জানান তিনি জীবনের সবকিছু দেখেছেন এবং এই কঠোর পরিশ্রমই তাতে তার লক্ষ্যে পৌঁছতে সাহায্য করেছে। এখন তিনি ভারতের অনেক মহিলার কাছে আদর্শ হয়ে উঠতে পারেন। কঠোর পরিশ্রম আর মনের ইচ্ছাকে সঙ্গ করলে একদিন ঠিক নিজের লক্ষ্যে যে পৌঁছে যাওয়া যায় তার একমাত্র উদাহরণ প্রিয়াঙ্কা।