সবকিছু ঠিকঠাক চললে দেশের পরবর্তী উপরাষ্ট্রপতি হতে চলেছেন বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বিজেপি সদর দপ্তরে সংসদীয় দলের বৈঠকে ধনখড়ের নামে এবারে পড়ল চূড়ান্ত সিলমোহর। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য নীতিন গড়করি, মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই মুহূর্তে বিজেপির, বলতে গেলে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়ন্সের যেরকম সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে তাদের সবকিছু ঠিকঠাক চলে দেশের পরবর্তী উপরাষ্ট্রপতি হওয়াটা কার্যত আর সময়ের অপেক্ষা বাংলার রাজ্যপালের জন্য।
২০১৯ সালের জুলাই মাসে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই পশ্চিমবঙ্গে শুরু হয়েছে রাজ্য বনাম রাজ্যপাল তরজা। একাধিক বিষয়ে, অজস্রবার রাজ্য সরকারের করা সমালোচনা করেছেন রাজ্যপাল। রাজভবন এবং নবান্নের মধ্যে চিঠি এবং পাল্টা চিঠির খেলা চলেছে বেশ কয়েক বছর। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটা সময়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে টুইটারে ব্লক পর্যন্ত করে দিয়েছিলেন। যদিও সেই রাগারাগি খুব একটা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। পরবর্তীতে জিটিএ চেয়ারম্যানের শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠানে দার্জিলিংয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন রাজ্যপাল। ঘটনাচক্রে সেই সময়, দার্জিলিংয়ে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। দুজনের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ কথোপকথন হয়। দার্জিলিং এর বাসভবনে রাজ্যপাল তাকে ডেকে চা-বিস্কুট পর্যন্ত খাইয়েছিলেন। সেই সাক্ষাতে দেখা মিলেছিল অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার।
তবে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে প্রথম থেকেই জগদীপ ধনকরের প্রবল বিরোধিতা করা হয়েছিল। অবশ্য প্রত্যাশিতভাবে বিরোধী বিজেপির কাছ থেকে সমর্থন পেয়েছিলেন রাজ্যপাল। রাজ্যের ভঙ্গুর গণতন্ত্র রক্ষায় জনগণের জন্য তিনি কাজ করেছিলেন বলেও দাবি করেছিল গেরুয়া শিবির। সম্প্রতি কালী বিতর্কে সময় বিরোধী দলনেতা সাধুদের নিয়ে রাজভবনে ঢুকে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে স্মারকলিপি পর্যন্ত দিয়েছিলেন। সেই একই জায়গায় দাঁড়িয়ে রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছিলেন। তৃণমূল, কংগ্রেস এবং বামেরা এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করলেও রাজ্যপাল ছিলেন তার নিজের জায়গায় স্থির। তবে এবারে আর এই স্থিরতা দীর্ঘস্থায়ী নয়, খুব শীঘ্রই এবার হয়তো পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল থেকে দেশের উপরাষ্ট্রপতি হতে চলেছেন ধনখড়। এই পরিস্থিতিতেই প্রশ্ন উঠছে, পশ্চিমবঙ্গের পরবর্তী রাজ্যপাল কে হবেন?