আসন্ন বাংলা বিধানসভা নির্বাচনের আগে বঙ্গ রাজনীতিতে ক্রমশ তৃণমূল-বিজেপি দ্বন্দ্ব চরমে উঠছে। একদিকে বাংলায় শীতের আমেজটা জাঁকিয়ে পড়ে তাপমাত্রা পারদ নিম্নমুখী, আবার অন্যদিকে রাজনীতির পারদ ক্রমশই ঊর্ধ্বমুখী রাজ্যে। আসন্ন বাংলা বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলি ভোট যুদ্ধ জয়ের উদ্দেশ্যে লড়াইয়ের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। কোন রাজনৈতিক দল অন্যকে এক ইঞ্চি জমিও ছেড়ে দেবে না। এরইমধ্যে আজ অর্থাৎ রবিবার বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় কলকাতার রেড রোডে কিছু বিজেপি নেতা কর্মী ও সাধারণ জনতার সাথে সভা করলেন। সেই সভা থেকেই ঝাঁঝালো আক্রমণ করলেন বাংলার শাসকদলকে।
রেড রোডের সভায় বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় আজ সরাসরি তৃণমূল শিবিরের বিরুদ্ধে আক্রমণ হেনেছেন। তিনি বিদ্রূপ করে বলেছেন, “গোটা ভারতে বাবা সাহেব আম্বেদকরের সংবিধান মেনে চলা হয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে চলে শুধু ‘ভাইপো’ র সংবিধান। বাংলায় কয়লা চোর কে সেটা সবাই জানে। এখন জনতাও সব বুঝতে পেরে গেছে।” ভাইপো বলে তিনি স্বভাবতই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিদ্রুপ করেছেন। অবশ্য এটা প্রথমবার নয়। বাংলায় গেরুয়া শিবির বারংবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছেন। প্রায় প্রত্যেক বিজেপি নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে “ভাইপো” বলে বিদ্রুপ করছেন। আজকে সেই সাথে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর দিকে প্রশ্নবাণ ছুড়ে কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, “কৃষক আন্দোলনকে খুব তো সমর্থন করছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাহলে এ রাজ্যে কৃষকদের জন্য কিছু করতে গেলে এত আপত্তি কেন মুখ্যমন্ত্রীর?”
গোটা দেশে যখন কৃষক আন্দোলন নিয়ে তোলপাড় চলছে ঠিক তখন বাংলার গেরুয়া শিবির কৈলাস বিজয়বর্গীয় নেতৃত্বে রাজ্যে তপশিলি জাতির উপর চলা অত্যাচারের প্রতিবাদ করতে আজ রাস্তায় নেমেছে। আজকে রেড রোডে তারা পালন করেছে “কলকাতা চলো” কর্মসূচি। এই কর্মসূচিতে কৈলাস বিজয়বর্গীয় ছাড়া বেশ কিছু প্রথম সারির বিজেপি নেতা উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে অন্যতম রাহুল সিনহা, মুকুল রায়ের মতো নেতারা। তারাও কৈলাশ বিজয়বর্গীয় সাথে তৃণমূলকে একই সুরে আক্রমণ করেছেন। এদিন কৈলাস বলেছেন, “মুকুল রায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছে বলে শাসক দল তার বিরুদ্ধে এর মধ্যেই ৪৫ টি মামলা দায়ের করে রেখেছে।”
এদিন কৈলাস বিজয়বর্গীয় আরো বলেন, “বাংলাতে শাসকদল তো বিরোধীদের সম্মান করতে পারে না। অবশ্য সম্মান দুরস্ত, দমনের চেষ্টা করছে তারা। বাংলা কে বাঁচানোর জন্য কত বিজেপি নেতা কর্মী তাদের প্রাণ দিয়েছেন। তৃণমূলের অরাজকতায় নাভিশ্বাস বিজেপি কর্মীদের। যারা দলের জন্য নিজেদের প্রাণ দিয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যদের অভিশাপ আছে। এই অভিশাপ গিয়ে পড়বে মমতার ওপর। ততই বিজেপিকে দমানোর চেষ্টা করুক না কেন মমতা, সফল হবেন না তিনি।”