রাজ্য রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে ফের উঠে এসেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম জনপ্রিয় সামাজিক প্রকল্প—লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই প্রকল্পকে ঘিরে বড় ঘোষণা আসতে পারে বলেই রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা চলছে। সূত্রের খবর, মহিলাদের জন্য বরাদ্দ ভাতা আরও বাড়ানো হতে পারে।
নির্বাচনের আগে ‘তুরুপের তাস’
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগেই রাজ্যের মহিলাদের জন্য চালু হয়েছিল লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। তখন থেকেই এটি পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম জনপ্রিয় প্রকল্প হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। বর্তমানে তপশিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের মহিলারা মাসে ১২০০ টাকা এবং সাধারণ শ্রেণির মহিলারা মাসে ১০০০ টাকা পান। ২৫ থেকে ৬০ বছর বয়সী মহিলারাই এই প্রকল্পের আওতায় আসেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিপুল মহিলা ভোটব্যাঙ্ক নিশ্চিত করতেই শাসকদল এই প্রকল্পকে তাদের অন্যতম বড় শক্তি হিসেবে ব্যবহার করে এসেছে। বিরোধীদের সমালোচনা এবং দুর্নীতির অভিযোগের মাঝেও মহিলাদের কাছে এই প্রকল্পের আবেদন অটুট রয়েছে।
কতটা বাড়তে পারে ভাতা?
শোনা যাচ্ছে, ভোটের আগে মহিলাদের জন্য এই প্রকল্পে বাড়তি বরাদ্দ ঘোষণা হতে পারে। একাংশের মতে, মাসিক ভাতা বাড়িয়ে ২০০০ টাকা পর্যন্ত করা হতে পারে। আবার অন্য সূত্রে খবর, সাধারণ শ্রেণির মহিলাদের জন্য ভাতা ২১০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে, তবে এর জন্য তাঁদের বার্ষিক আয় ২.১ লক্ষ টাকার কম হতে হবে। এই সুবিধা নিতে হলে উপভোক্তাদের আয়ের শংসাপত্র জমা দিতে হতে পারে।
সরকারের অবস্থান
যদিও এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিক জনসভা থেকে বলেছেন, যতদিন তিনি বেঁচে থাকবেন, ততদিন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প চালু থাকবে। উত্তরবঙ্গের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে তিনি দাবি করেছিলেন, ‘‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার আমরা শুধু ভারতে নয়, সারা পৃথিবীতে প্রথম চালু করেছিলাম। মেয়েদের সম্মান রক্ষার জন্য এই প্রকল্প সারাজীবন চলবে।’’
বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া
অন্যদিকে বিরোধীরা এই প্রকল্পকে শাসকদলের নির্বাচনী হাতিয়ার বলে আক্রমণ শানিয়েছে। বিজেপির নেতারা ক্ষমতায় এলে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের বরাদ্দ দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। ফলে প্রকল্পটিকে ঘিরে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে।
মহিলাদের প্রত্যাশা
রাজ্যের নানা প্রান্তের মহিলারা মনে করছেন, যদি সত্যিই ভাতা বাড়ানো হয় তবে তা তাঁদের সংসারের জন্য অনেকটা স্বস্তি বয়ে আনবে। বিশেষত মূল্যবৃদ্ধির বাজারে এই বাড়তি সাহায্য তাঁদের আর্থিকভাবে সহায়ক হবে।














