চলতি মাসে গোড়ার দিকে ট্যুইটে দলের প্রতি একপ্রকার অসন্তোষ প্রকাশ করে পদ্মশিবির ত্যাগ করেছিলেন টলি অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়। শ্রাবন্তীর এই পদক্ষেপের পর রাজনৈতিক সমালোচকরা মনে করেছিলেন, তিনি বুঝি এবার ঘাসফুলে ঝুঁকতে পারেন। এ বার সেই ছবিটাই যেন সকলের চোখের সামনে এল। সোমবার দুপুরে বাসন্তী ব্লকের মসজিদবাটিতে তৃণমূলের দলীয় অনুষ্ঠানে সভামঞ্চে দেখা গেল অভিনেত্রী শ্রাবন্তীকে। সেখানেই শেষ নয়, এই মঞ্চ থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদও জানান তিনি।
সোমবার, তৃণমূলের ওই দলীয় সভায় উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের আরো পাঁচ বিধায়ক। শওকত মোল্লা, পরেশরাম দাস, সুব্রত মণ্ডলদের সামনেই শ্রাবন্তী সভামঞ্চ থেকে সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, “আমি বাংলার জন্য কাজ করতে চাই। বাংলারই মেয়ে আমি। মমতাদি’কে অনেক ধন্যবাদ। আপনাদের কাছে অনুরোধ, আমায় আপন করে নিন। আমি আপনাদের জন্যই কাজ করতে চাই।” এরপর, বাসন্তীর বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল জানান, শ্রাবন্তী তৃণমূলেরই লোক। শুধু তাই নয়, সভামঞ্চেই শ্রাবন্তীকে উত্তরীয় পরিয়ে ঘাসফুলের তরফে বিশেষ সম্মানও জানান।
আজকের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই কার্যত তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। তবে, শ্রাবন্তী সত্যিই এই মুহূর্তে সক্রিয় ভাবে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন কি না তা স্পষ্ট নয়। এই বিষয়ে নিজেও এখনো কোনও মন্তব্য করেননি অভিনেত্রী। তৃণমূলের তরফ থেকদও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। তবে একটা প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি সামনের পুরনির্বাচনের আগেই ঘাসফুল শিবিরে আরও একটি নতুন ‘তারকা-পালক’ জুড়তে চলেছে দলে?
প্রসঙ্গত চলতি বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে ফেব্রুয়ারি মাসে সকলকে চমকে দিয়ে কৈলাস বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষের হাত ধরে ঘাসফুলে যোগ দেন শ্রাবন্তী। নাম দেওয়ার পর ভোটের লড়াইও লড়েন। কিন্তু ভোটের ফল বের হওয়ার পর দেখা যায়, বেহালা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল প্রার্থী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে ৫০ হাজারেরও বেশি ভোটে তিনি পরাজিত হয়েছেন। এরপর বিজেপির আর কোন অনুষ্ঠানে যোগ দেননি এরপর অগস্ট মাসে অভিনেত্রীর জন্মদিনে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে শুভেচ্ছা চিঠি পাঠালে আপ্লুত হয়ে দিদির প্রতি ভালোবাসা জাহির করেন শ্রাবন্তী। তারপর থেকেই শুরু হয়েছিল অভিনেত্রীর তৃণমূলে যোগদানের আশঙ্কা। আর সেই আশঙ্কায় এদিন কার্যত শিলমোহর পড়ে গেল।