একুশের নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেসের অবস্থান যে বেশ বেগতিক তা বুঝতে পেরেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচনের কয়েক মাস আগে দল বেশ দ্রুত গতিতেই ভেঙে যাচ্ছে। আর এরকম ভাবে তৃণমূল নেতাকর্মীরা পদত্যাগ করতে থাকলে নির্বাচনের সময় বেশি সমস্যায় পড়তে হবে শাসকদলকে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। এই কথা ভেবেই দলে ভাঙন রুখতে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর কালীঘাটে বাড়িতে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। আজ বিকেলে দলের শীর্ষ নেতাদের সাথে নিজের বাড়িতে বৈঠক করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতে মরিয়া মুখ্যমন্ত্রী।
বেশ কিছুদিন আগেই তৃণমূলের প্রতি বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিলেন নামজাদা নেতা শুভেন্দু অধিকারী। শেষ পর্যন্ত তিনি মন্ত্রিত্ব পদ থেকে ইস্তফা দেয়ার পর বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দিয়েছেন। বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেয়ার মাধ্যমে তিনি তৃণমূল সরকারের সাথে দীর্ঘ ২১ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। কিন্তু শুধুমাত্র শুভেন্দু অধিকারী পদত্যাগ করে সমস্যা মিটে গিয়েছে এমন নয়। শুভেন্দু অধিকারী ছাড়াও দলকে প্রায় চমকে দিয়েই তৃণমূল ছেড়েছে আসানসোলের দাপুটে মেয়র ও পৌর প্রশাসক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। এছাড়াও রাজ্যজুড়ে একাধিক বিধায়কের গতিবিধি যথেষ্ট সন্দেহ জনক। অনেকের বিজেপিতে যোগদান করার সম্ভাবনা প্রবল। শুধুমাত্র বিধায়ক দল ছাড়ছে এমন নয়, অনেক নিচু তলার শাসক দলের কর্মী দলের কার্যকলাপের বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
আজকের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন সুব্রত বক্সী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম এর মত তৃণমূলের প্রথম সারির নেতা কর্মীরা। এছাড়া ওই বৈঠকে ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই জনোনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন যারা দল ছেড়ে যাওয়ার ইচ্ছা আছে তারা যেতে পারে। একই সুর ছিল অন্যান্য শীর্ষ তৃণমূল নেতাকর্মীদের মুখে। তবে শুভেন্দু অধিকারী পদত্যাগের ঘটনা অনুঘটকের মত কাজ করেছে দল ভাঙার প্রক্রিয়ায়। এই মুহূর্তে দলের মধ্যে ক্ষোভকে প্রশমিত করে নির্বাচনের যুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াতে চায় তৃণমূল। সেই রণকৌশল স্থির করতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর নিজের বাড়িতেই আজ জরুরি বৈঠক ডেকেছে।