পদত্যাগ করার পর মমতা ব্যানার্জির (Mamata Banerjee) বিরুদ্ধে সরাসরি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Rajib Banerjee)। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার পর মমতার বিরুদ্ধে অসহযোগের অভিযোগ তুলে দিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজিব বললেন, আড়াই বছর আগে তিনি মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে চেয়ে ছিলেন। কিন্তু সেই সময় মমতা ব্যানার্জি নিজে তাকে নিরস্ত থাকতে বলেছিলেন। তবে তার পদত্যাগের কারণ বলতে গিয়ে এদিন কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ ভবন এর সামনে দাঁড়িয়ে রাজিব অভিযোগ করলেন,’ আড়াই বছর আগে আচমকা আমাকে সেচমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আর সে কথা আমাকে জানানোর সৌজন্যে টুকু দেখাননি মুখ্যমন্ত্রী। এরপর আমি মন্ত্রিত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। কেউ মন্ত্রী হয়ে জন্মায় না, একটা দপ্তরের মন্ত্রী কেউ চিরকাল থাকে না। একটা সময় আমি সেচ মন্ত্রী ছিলাম। যে দপ্তরের দায়িত্ব মমতা ব্যানার্জি আমাকে দিয়েছেন সেটা যথাসাধ্য পূরণ করার চেষ্টা করেছি। দপ্তর বন্টন করা মমতা ব্যানার্জির নিজের কাজ। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে উনি আমাকে সরিয়ে দিতে পারেন কিন্তু, সৌজন্য টুকু মুখ্যমন্ত্রী থেকে আশা করেছিলাম।”
দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,’ সেই সময় আমি উত্তরবঙ্গে সেচ দপ্তরের কাজে ছিলাম। সেখানে গিয়ে আমি মিটিং করেছিলাম দলীয় সমর্থকদের সঙ্গে। কিন্তু তৃণমূল ভবনে বসে টিভিতে ব্রেকিং নিউজ দেখার সময় আমি জানতে পারি আমাকে সেচ মন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি সেদিন অত্যন্ত অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছিলাম। তারপরে আমি মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা চিন্তা করি। কিন্তু তখন মুখ্যমন্ত্রী আমাকে নিরস্ত করেছেন।”
রাজিব আরো বলেছেন,’ মাঝে আড়াই বছর অনেক ক্ষোভ এবং অসন্তোষ ছিল। মাননীয় নেত্রী এবং সিনিয়র লিডারদের অনেকবার এই কথা বলেছি। কিন্তু বিগত তিনমাস আমার কিছু সহকর্মী এবং সতীর্থদের কথা আমাকে অত্যন্ত আঘাত করেছে। আমি হয়তো এই সিদ্ধান্ত নিতাম না। কোথাও কোন দিন ভাবিনি এত কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এই সিদ্ধান্ত নিতে আমার অত্যন্ত খারাপ লেগেছে। তবে গত এক মাসে যা হয়েছে তাতে আমার মনে গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে। আর তারপরই রাজভবনের বাইরে দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন ডোমজুড়ে বিধায়ক।’
যদিও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, তার জীবনে মমতা ব্যানার্জি একটি বিরাট অবদান রেখেছেন। তাই তিনি মমতা ব্যানার্জির কাছে চির কৃতজ্ঞ। তিনি এদিন বারবার মমতাকে নেত্রী হিসেবে সম্বোধন করেছেন। তিনি বলেছেন,’ আমার জীবনে যদি কারও অবদান থাকে তাহলে তিনি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী। আমি কি কাজ করেছি তা মানুষ বিচার করবেন। কিন্তু তিনি আমাকে এই সুযোগ করে দিয়েছেন। যতদিন বেঁচে থাকব, তার কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ এবং শ্রদ্ধাশীল থাকবো। নতমস্তকে দলনেত্রীকে প্রণাম জানাচ্ছি।”