কৌশিক পোল্ল্যে: বলিউড এমনই এক মায়ানগরী যেখানে সম্পর্কের খেলা চলতে থাকে প্রতিনিয়ত। কখন, কীভাবে, কার সঙ্গে কার সম্পর্কের রসায়নে পরিবর্তন ঘটবে তা আগে থেকে কেউ বলতে পারে না। বহু নতুন সম্পর্ক, বিচ্ছেদ, বিবাহ ও অসমাপ্ত প্রেমকাহিনীর সাক্ষী এই বলিউড ইন্ডাস্ট্রি। আজ এমনই এক জুটির প্রেমকাহিনী আপনাদের সামনে তুলে ধরব যাদের সম্পর্ক এগিয়েছিল অনেক দুর, এ নিয়ে তৎকালীন সময়ে কম জলঘোলা হয়নি, তবু ভাগ্যের পরিহাসে সেই সম্পর্ক পরিনতি পায়নি। কর্পূরের মতোই উবে গিয়ে দুটি হৃদয়ের একসময়ের প্রেমগাঁথা।
নব্বইয়ের দশকে হিন্দি সিনেমার অত্যন্ত জনপ্রিয় জুটি সলমান খান ও ঈশ্বর্য রাইয়ের প্রেমের গল্প সকলেই জানেন কমবেশি। দিনদিন জনপ্রিয়তার শীর্ষে চড়তে থাকা এই লাভ বার্ডস কেন হঠাৎ আলাদা হয়ে গেলেন? কি ছিল তাদের সম্পর্কবিচ্ছেদের মূল কারন, চলুন জেনে নেওয়া যাক।
সালটা ছিল ১৯৯৭। ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যাক টু ব্যাক হিট দিয়ে নিজের পাকা জায়গা তৈরি করে নিয়েছিল সলমান। অন্যদিকে বিশ্বসুন্দরী খেতাব জয় করে ধীরে ধীরে বলিপাড়ায় নিজের নাম ও পরিচিতি তৈরি করছিলেন ঈশ্বর্য। সে সময় পাকিস্তানি অভিনেত্রীর সোমি আলির সঙ্গে প্রেমজনিত সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন সলমান। কিন্তু ঈশ্বর্যকে দেখার পর নিজের মতবদল করে নেন ভাইজান। সঞ্জয় লীলা বনশালির ‘হাম দিল দে চুকে সনম’এ কাস্ট হিসেবে সলমানকে সাইন করায় অভিনেতা নিজেই ঈশ্বর্যকে এই সিনেমার অভিনেত্রী হিসেবে কাস্ট করার অনুরোধ করেন। বনশালি রাজি হলে সিনেমার কাজ শুরু হয় এবং এই সিনেমার সফলতা দুজনকে আরও কাছাকাছি এনে দিয়েছিল।
যদিও এরপরই সমস্যার সূত্রপাত হয়। ঈশ্বর্যর বাবা সলমানকে একেবারেই পছন্দ করতেন না ফলে মতবিরোধের জেরে পরিবারের থেকে আলাদা থাকতে শুরু করেন অ্যাশ, কিন্তু সেই মুহূর্তেই তার পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব ছিল না। এদিকে বিয়ের জন্য জেদের বশে অভিনেত্রীর সঙ্গে একপ্রকার জোরাজুরি শুরু করেন সলমান। ২০০১ সালে একদিন মাঝরাতে মদ্যপ অবস্থায় ঈশ্বর্যর ফ্ল্যাটে এসে তার দরজায় ধাক্কা মারতে শুরু করেন সলমান। বাধ্য হয়ে তাকে ঘরের ভিতর নিয়ে আসেন অ্যাশ। এরপর রাত তিনটে অবধি তাদের চিৎকার, চেঁচামেচি চলতে থাকে। ঈশ্বর্যর বাড়ির ছাদ থেকে আত্মহত্যার হুমকিও দেন সলমান।
শোনা যায়, বিয়ের জন্য রাজি না হওয়ায় ঈশ্বর্যকে মারধর করেন সলমান। এরপরই অভিনেত্রী সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত একপ্রকার নিয়েই ফেলেন। এরপর হঠাৎই সলমানের জীবনে আবারো সোমি আলির আগমন ঘটলে সলমানের দিক থেকে পুরোপুরি মুখ ফিরিয়ে নেন ঈশ্বর্য রাই। এখানেই তাদের সম্পর্কের ইতি ঘটে। আজ ঈশ্বর্য রাই বচ্চন পরিবারের পুত্রবধূ হয়ে সংসার করছেন এবং সলমান আজও অবিবাহিত রয়ে গেছেন। এই জুটির বিচ্ছেদের খবরে খুবই হতাশ হয়েছিল উভয়ের শুভাকাঙ্খীরা, পরবর্তীকালে এই দুজনকে একসঙ্গে কখনোই দেখা যায়নি এবং একটি অপরিনত প্রেমকাহিনী এভাবেই বলিউডের ইতিহাসে গল্প হয়ে রয়ে গিয়েছে।