এবছর হিন্দি টেলিভিশন শো সারেগামাপা-র মঞ্চে বাংলার জয়জয়কার। সেরা ১৬ জন প্রতিযোগির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন বাংলার স্নিগ্ধজিৎ, কিঞ্জল, অনন্যা, নীলাঞ্জনার গায়ক গায়িকারা। এঁরা সকলেই বাংলা রিয়ালিটি শো-এর মঞ্চের অতি পরিচিত মুখ। গায়ক গায়িকা হিসাবে যথেষ্ট নামডাক রয়েছে সকলের। এদের মধ্যে স্নিগ্ধজিৎ ভৌমিক বাংলা সারেগামাপা ২০১৯-র ফাইনালে পৌঁছেছিলেন । বলা ভালো, সেই সময় সকল সঙ্গীতপ্রেমীর প্রিয়ের তালিকায় একদম প্রথম সারিতেই ছিলেন তিনি। তবে, একটুর জন্য হাতছাড়া হয়ে যায় সেই ট্রফি।
বাংলার মতো জাতীয় স্তরে জি টিভির জনপ্রিয় রিয়ালিটি শো সারেগামাপা’র মঞ্চে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন বাংলার এই তরুণ গায়ক। প্রত্যেক সপ্তাহে এই রিয়ালিটি শো-তে নিত্যনতুন চমক দিচ্ছে বুনিয়াদপুরের গর্ব। বাপ্পি লাহিড়ী থেকে উদিত নারায়ণ সকলেই মুগ্ধ এই বাঙালীর গায়কের গানে।সদ্য সমাপ্ত সপ্তাহে সারেগামাপা-র মঞ্চে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত ফিল্মমেকার সুভাষ ঘাই।
এই স্পেশ্যাল এপিসোডে সঞ্জয় দত্তের ‘খলনায়ক’ ছবির গানে পারফর্ম করলেন বঙ্গ তনয়। এদিন সাদা-কালো প্যান্ট স্যুট আর টুপিতে চেনা দায় গায়ক স্নিগ্ধজিৎ-কে। এদিন ফের একবার নিজের গান আর সুরে সকলের মন জিতে নিল এই ট্যালেন্টেড গায়ক। আর নতুন বছরের শুরুতেই সেরা উপহারটা ‘পরদেশ’ পরিচালকের কাছ থেকেই পেয়ে গেলেন গায়ক স্নিগ্ধজিৎ। এদিন নিজের স্মৃতির পাতা বেয়ে আশির দশকে চলে গেলেন ‘খলনায়ক’ পরিচালক। তিনি স্নিগ্ধজিৎের গানে মুগ্ধ হয়ে বলেন, ‘তুমি দুর্দান্ত গেয়েছো। আমি যতই প্রশংসা করি না কেন সেটা কম হবে, তোমার গান শুনে আমি অতীতের স্মৃতিতে ভেসে গেলাম। এই খলনায়ক ছবির টাইটেল ট্রাকটা আদপে কিন্তু দুঃখের গান, কত বড় ক্রিমিন্যাল সে, এই গানে ওই কথাই উল্লেখ আছে। অথচ এই গানে নায়কনাচছে, আশেপাশের সকলে নাচছে’।
এরপরই স্নিগ্ধজিৎের প্রশংসা করে তাঁর হাতে একটা ফাঁকা চেক সাইন করে তুলে দেন সুভাষ ঘাই। কিন্তু ফাঁকা চেক কেন? আসলে তিনি বলেন, ‘আমি কোনও টাকার অঙ্ক লিখব না, সেটা তুমি ভরে নাও’। এরপরেই সে লজ্জায় লাল হয়ে জানায়- ‘না, স্যার আমার এতো বড় স্টেটাস নয় যে আমি আপনার থেকে কোনও টাকা নেব’। তবে অনেক জোড়াজুড়ির পর সেই চেক নেয় স্নিগ্ধজিৎ। তবে আশ্চর্যের ব্যাপার হল ওই ব্ল্যাঙ্ক চেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নয় বরং মাত্র ১ টাকার অঙ্ক ভরে সে। যা দেখে আরও বেশি অভিভূত হন পরিচালক সুভাষ ঘাই। এরপরেই তিনি বলেন, ‘এটাই একজন প্রকৃত শিল্পীর পরিচয়’। স্নিগ্ধজিৎ-কে ভালোবাসা ও আর্শীবাদে ভরিয়ে দেন তিনি।
কথা প্রসঙ্গে এরপর বেরিয়ে আসে আরো এক কথা। পরদেশ ছবির শ্যুটিংয়ের সময় চেক নয়, সুভাষ ঘাইয়ের থেকে নগদ টাকা নিয়েছিল অভিনেতা আদিত্য চোপড়া। এদিনও জুরিদের কাছ থেকে নিজের জন্য ১০০ শতাংশ নম্বর পেয়েছে স্নিগ্ধজিৎ।শুরু থেকেই নিজের গানের প্রতিভা দিয়ে দর্শকদের মন জয় করে এসেছেন স্নিগ্ধজিৎ। একদম অডিশন রাউন্ডেই বিশাল শেখরের থেকে ছিনিয়ে নিয়ছিলেন তাঁর গানে প্লেব্যাক করার অফার। এই মঞ্চে তাঁর গান শুনে প্রশংসা করেছেন একাধিক বলি তারকারাও। এবারেও তার ব্যতিক্রম হলনা। বাঙালী ছেলের সাফল্যে বাঙালী দর্শক ও খুশি।