বলিউডের অন্যতম প্রতিভাবান অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর অবাক হয়ে গেছে সারা দেশ। আর তাঁর আত্মহত্যার কারণ নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। অভিনেতার মৃত্যুর পর তাঁর নানা পুরোনো ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে গেছে। কিছু কিছু ভিডিও দেখলে ভক্তদের চোখে জল আসবে। এরই মধ্যে একটি ভিডিও ছিল ২০১৬ সালের IIT বোম্বের একটি অনুষ্ঠানের। যেখানে তিনি তাঁর জীবনের নানা কথা ছাত্রছাত্রীদের সাথে শেয়ার করেছিলেন।
সুশান্ত সেইসময় বলেছিলেন, “আমি ছোট থেকেই খুব উচ্চাকাঙ্খী ছিলাম। বাড়ির ছোট ছেলে হওয়াতে খুব আদর পেয়েছিলাম। মানুষের সাথে কথা বলতে খুব লজ্জা পেতাম। এখনও অবশ্য লজ্জা পাই। কিন্তু অভিনয়ে আসার পর থেকে আস্তে আস্তে সব লজ্জা ভাঙার চেষ্টা করলাম। অভিনয়ে বিভিন্ন চরিত্রের মধ্যে দিয়ে আমি আমার আত্মবিশ্বাস ফিরে পাই। স্টেজে কথা বলতেও আমি পারি না। যদিও এখন আমি অভিনয়ের মধ্যে নেই, তাই সব গন্ডগোল করে ফেলতে পারি। তাই আগে থেকে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।”
এরপর সুশান্ত হাসতে হাসতে আরও বলেন, “আজ যখন এখানে আসি,ভাবছিলাম যে কি বলবো? অর্থ আর পরিচিতি সব সুখ দেয় না। আমি নিজেই মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এসেছি। আমি বড় হয়ে ওঠার পর থেকে অর্থের ভূমিকা ছিল। আমার পরিবার আমাকে ইঞ্জিনিয়ার হতে বলেছিল আর দিদিদের মেডিক্যাল নিয়ে পড়তে বলেছিল। আর ইঞ্জিনিয়ারের পর সিভিল সার্ভিস দিয়ে চাকরি করতে বলেছিল। শুরুটা কিন্তু আমি সেভাবেই করেছিলাম। কোচিং, পড়াশুনা স্বয়ং করে শেষে একাধিক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়ার সুযোগ পাই। আমি দিল্লি কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হই। কিন্তু আমি সাফল্যের কাছাকাছি এসেও আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। আমি মন থেকে সুখী ছিলাম না। আর সেই সুখী থাকার জন্য থিয়েটার, নাচের ক্লাসে ভর্তি হই। আর এই থিয়েটার ও নাচ করতে করতেই আমার সিনেমায় আসার কথা ভাবি। আর ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ হতে আর মাত্র দুটি সেমিস্টার বাকি, তখনই আমি ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে দিই।”
কলেজ জীবনের ও নানা কথা তুলে ধরেন সুশান্ত। তাঁর কলেজের প্রফেসররা তাঁকে স্টুডেন্টদের সাথে কথা বলতে বলেন। আর তখন তিনি মজার চলে প্রফেসরকে ইঞ্জিনিয়ারিং এর ডিগ্রীটা ফিরিয়ে দেবার কথাও বলেন। সেদিনের বক্তৃতায় অভিনেতাকে খুব হাসিখুশি দেখিয়েছিল। তিনি সবসময় খুব হাসিখুশি থাকতেন। তিনিই যে এরকম অবসাদের শিকার হবেন আর এই মর্মান্তিক পরিণতি হবে তা ভাবতেও পারেনি তাঁর ভক্তরা।