আগামী বছর হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের ২০২১ বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে দেদার চলছে এক পার্টি থেকে অন্য পার্টিতে যাওয়ার পালা। এই দলবদল এর ইস্যুতে বর্তমানে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। বেশ কিছুদিন ধরে শাসক দলকে কোণঠাসা করছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তারপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তিনি তৃণমূল ছেড়ে চলে গেলেন গেরুয়া শিবিরে। গেরুয়া শিবিরে যাবার পরেই তৃণমূলকে সরাসরি নিশানা করছেন তিনি। কিছুদিন আগে সভা থেকে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, ২১ বছর তৃণমূল করেছেন বলে তিনি লজ্জিত।
কয়েকদিন আগে রাজ্য সফরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এসেছেন। মেদিনীপুরের সভা থেকে তিনি শুভেন্দুর হাতে তুলে দিয়েছেন গেরুয়া পতাকা। ঐ মঞ্চে শুভেন্দু অধিকারী সহ আরো অনেকে তৃণমূলের থেকে বেরিয়ে গিয়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন। তাদেরকে শনিবার হেস্টিংস এ বিজেপি কার্যালয় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু তার আগেই হেস্টিংসের বিজেপি কার্যালয় চত্বরে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কর্মীদের উপর।
তবে তারপরে সুষ্ঠুভাবে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শুরু হয়। সেই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় শাসক দল তৃণমূল কে কটাক্ষ করেন অধিকারী পরিবারের শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু বলেন,” তৃণমূল এখন একটি কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। এই কোম্পানিতে কোন শৃঙ্খলা নেই। আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে এসে একটা প্রকৃত দলের সদস্য পদ পেলাম।” এছাড়াও তার অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী কিষান যোজনা সহ আরো অনেক যোজনা সুবিধা বাংলার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে পাচ্ছেন না। দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূল করেছেন বলে তার লজ্জা লাগছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
তবে তার এই লজ্জিত হবার কথায় তীব্র অসন্তুষ্ট হয়েছে শাসকদল তৃণমূল। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হয়ে শুভেন্দুর মন্তব্য নিয়ে কথা বলেন। তিনি সরাসরি কিছু না জানালেও, ঘুরিয়ে তার অসন্তোষ প্রকাশ করেন। শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য নিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বললেন,”আমি কোন মন্তব্য করব না। যা বলবেন ব্লক সভাপতি।” তবে সুনিল মন্ডলের ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় কোন মন্তব্য করতে নারাজ। পার্থর সাফ দাবি,” কেন সুনীলকে নিয়ে কথা বলবো? হাতে গোনা লোকের মধ্যেও আসেন না সুনীল।” তবে কোনো মন্তব্য না করলেও তৃণমূল শিবির যে শুভেন্দু অধিকারী এবং সুনীল মণ্ডল কে নিয়ে বেশ অসন্তুষ্ট তা স্পষ্ট বোঝা গেল এ দিন।