আজকের শিরাকোলে জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলা ছিল একটা পুরো প্ল্যান, এমনটাই দাবি করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আজ মেয়ো রোডে বাংলা মূর্তির নিচে কৃষকদের সমর্থনে তৃণমূল সমাবেশ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছিলেন। সেখানেই তিনি বিজেপি নেতৃত্বদের ওপর হামলার ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে একহাত নেন গেরুয়া শিবিরকে। তিনি কটাক্ষ করে বলেছেন, জনসভায় লোক হয়না বলে ন্যাশনাল টিভির দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এমন সব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। নাড্ডার জনসভায় যাওয়ার জন্য কনভয় করে ৫০ টি গাড়ি নিয়ে যাওয়ার কি দরকার ছিল। তবে ঘটনাটির খুঁটিয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, সকাল বেলায় কলকাতা থেকে ডায়মন্ড হারবার যাওয়ার পথে তার এবং অন্যান্য নেতা কর্মীদের কনভয় ঘিরে বিক্ষোভকারী দল হামলা চালায়। তাদের গাড়ি উদ্দেশ্য করে ইট, পাথর, ভাঙ্গা কাচের বোতল ইত্যাদি ছোড়া হয়। অনুপম হাজরা, কৈলাস বিজয়বর্গীয় প্রমুখের গাড়ির কাচ অব্দি ভেঙে যায়। অনেক বিজেপি কর্মীকে মাটিতে ফেলে মারা হয়। কিন্তু বিজেপির অভিযোগ এই সমস্ত চলছিল পুলিশের সামনেই। এই ঘটনার অভিযোগ জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে। এছাড়াও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর।
এদিন মেয়ো রোডে সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তোপ দাগেন বিজেপির বিরুদ্ধে। তিনি গেরুয়া শিবিরকে কটাক্ষ করে বলেন, “প্রতিদিন যেন আর কোন পার্টি প্রোগ্রাম করবে না। বাংলায় শুধু বিজেপি দল প্রোগ্রাম করবে। আসলে ওদের কাজ নেই তো কিছু। মানুষের জন্য তো একটা কাজও করে না। কোনদিন বাংলায় চিফ মিনিস্টার চলে আসবে, কোনদিন হোম মিনিস্টার, কোনদিন চাড্ডা, কোনদিন নাড্ডা আবার কোনদিন ফাড্ডা, একের পর এক চলতেই থাকে। আর যদি জনসভায় লোক না আসে, একটা হামলার ভিডিও বানিয়ে জাতীয় সংবাদমাধ্যমের কাছে নাটক করবে। দেখো আমায় মেরেছে, আহা রে!”
#WATCH They (BJP) has no other work. At times Home Minister is here, other times its Chaddha, Nadda, Fadda, Bhaddha is here. When they've no audience, they call their workers for doing Nautanki: West Bengal CM Mamata Banerjee addressing a public rally in Kolkata pic.twitter.com/uXrIyhdrj2
— ANI (@ANI) December 10, 2020
এদিন তিনি বিজেপি শিবিরকে বিদ্রুপ করে প্রশ্ন করেন, “একজনের জনসভায় যাওয়ার জন্য পঞ্চাশটা গাড়ি লাগে কেন? আমি তো কোথাও গেলে আমার পিছনে ৩ টে গাড়ি থাকে। আর আপনার প্রেস কি রেডি ছিলো আপনার উপর হামলা হবে বলে। হঠাৎ করে হামলা হলো আর সেটার ভিডিও বানানো হয়ে গেল। একই স্যাটেলাইট সিস্টেম নাকি। নিজেদের খুব ওভারস্মার্ট ভাবেন? আসলে ঘটনাটা কি হয়েছে সেটা তো রাস্তায় দাঁড়িয়ে কেউ দেখতে যাইনি। বোঝাই যাচ্ছে সব।”
এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী এদিন অভিযোগ জানিয়েছে, “রাজ্যে কখন কোন বিজেপি নেতা কর্মসূচি করতে চলে আসে আগে থাকতে কেউ কিছু জানায় না। আর রাজ্য পুলিশের কাছে নিরাপত্তা ও চায়না। এদিকে কিছু হলেই জবাব দাও জবাব দাও করে চিল্লায়। আরো তিনি যোগ করেন, সাথে তো এত বিএসএফ, সিআইএসএফ, কমান্ডো থাকে। তাহলে সাধারণ মানুষ কী করে আপনাদের গাড়িতে হাত দিল? আর একবার সিকিউরিটি চাইলেই তো রাজ্য থেকে দেওয়া হয়। চেয়ে তো দেখুন। আপনার তো রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা নিয়ে নাক গলানোর কথা নয়। এটা কি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ধ্বংস করে দেওয়ার প্ররোচনা চলছে? সব বিষয়ে রাজ্যকে দোষ দেবেন না। রাজ্যের উপর ভরসা করলেই রাজ্য নিরাপত্তা দেবে। বিরোধী বলে নিরাপত্তা দেব না এমন নয়। বরং চাইলে তৃণমূলের থেকে বেশি নিরাপত্তা দেব।” শেষে তিনি বলেন, “পুলিশকে পুরো ঘটনাটির খুঁটিয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দিচ্ছি আমি।”