পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্যবাসীর উন্নত জীবনযাপনের জন্য একাধিক জল কল্যাণমূলক প্রকল্প চালু করেছে। এর মধ্যে কিছু প্রকল্পে সরাসরি উপভোক্তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়। এই প্রতিবেদনে আমরা এমন এক প্রকল্পের কথা জানাবো যাতে ব্যাপক উপকৃত হবেন নির্মাণ শ্রমিকরা। আপনি শুনলে অবাক হবেন যে এই প্রকল্পের মাধ্যমে শ্রমিকরা পেতে পারেন এককালীন ২.৫ লক্ষ টাকা এবং মাসিক পেনশন। এই প্রকল্পের নাম কি ও কি করে আবেদন করা যাবে? এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত জানতে এই প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
কারা পাবেন সামাজিক সুরক্ষা যোজনা?
মমতা সরকারের এই প্রকল্পের নাম, ‘সামাজিক সুরক্ষা যোজনা‘। এই প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হলো শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা প্রদান করা। প্রকল্পের আওতায় রয়েছেন সড়কপথ, ভবন নির্মাণ, রেল, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ-নিকাশি, টেলিফোনের টাওয়ার তৈরি ও তার লাগানো, জল সরবরাহ ব্যবস্থা, জলের ট্যাঙ্ক ও জলাশয় তৈরি, পাইপলাইন তৈরি, মেরামতি, রক্ষণাবেক্ষণ ও তা ভাঙা, টালি-ইট তৈরি, পাথর খাদান ও পাথর ভাঙার কাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকরা। এই প্রকল্পে, ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী নির্মাণ শ্রমিকরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন। প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর, সরকারের তরফে তাদের সামাজিক সুরক্ষা অ্যাকাউন্টে প্রতি মাসে ৫৫ টাকা জমা করা হবে। ৬০ বছর বয়সে পৌঁছালে ওই জমাকৃত টাকা ফেরত পাওয়া যাবে। এই স্কিমের আওতায় নির্মাণ শ্রমিকদের পেনশনও দেওয়া হবে। যদি কোনও শ্রমিক কমপক্ষে ৫ বছর এই প্রকল্পের সদস্য হন, তবে অবসর গ্রহণের পর তাকে প্রতি মাসে ১০০০ টাকা করে পেনশন প্রদান করা হবে। প্রকল্পে শ্রমিকদের কোনো টাকা দিতে হবে না, সকল টাকা সরকারীভাবে জমা হবে।
অ্যাকাউন্টে আসবে ২.৫ লাখ টাকা
এই প্রকল্পের মূল আকর্ষণ হলো, যদি ১৮ বছর বয়সী শ্রমিক এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হন, তাহলে ৬০ বছর বয়সে তার অ্যাকাউন্টে প্রায় ২.৫ লাখ টাকা জমা হয়ে যাবে। সরকারের তরফে ভবিষ্যতে যদি এই স্কিমের আওতায় জমা পরিমাণ বাড়ানো হয়, তবে এই অঙ্কটিও বৃদ্ধি পাবে। যদি কোনও শ্রমিক অবসর গ্রহণের আগে প্রয়াত হন, তাহলে সাধারণ মৃত্যুতে ৫০,০০০ টাকা, দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে ২ লক্ষ টাকা এবং দুর্ঘটনায় শারীরিক অক্ষমতা ঘটলে ৫০,০০০ টাকা থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই প্রকল্পটি নির্মাণ শ্রমিকদের জন্য এক বড় আশীর্বাদ হয়ে উঠেছে, যাদের একদিকে নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে তাদের ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত করা হচ্ছে।