এত আসন থাকতে নন্দীগ্রাম কেন? বিরোধীদের সব প্রশ্নের পাল্টা জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী
মমতাকে এদিন আবারো শোনা গেল তার ট্রেডমার্ক স্টাইলে বলতে, "ভুলতে পারি নিজের নাম, ভুলবো নাকো নন্দীগ্রাম।"
এবারের নির্বাচনে নন্দীগ্রাম আসন থেকে প্রার্থী হতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঘোষণার পর থেকেই বিজেপি শিবির একের পর এক দাবী করতে শুরু করেছিল শুধুমাত্র সেফ সিট খুঁজে পাওয়ার জন্য ভবানীপুর থেকে নন্দীগ্রামে পৌঁছে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, ভবানীপুর কেন্দ্রতে মমতা নিজে জিততে পারবেন না তাই তিনি তার আন্দোলনের পীঠস্থান নন্দীগ্রামে প্রার্থী হচ্ছেন।
এতদিন পর্যন্ত নন্দীগ্রামে প্রার্থী হওয়ার নিয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও এবারে সকলের সামনে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন নন্দীগ্রামে পা রেখে সরাসরি নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ভালো সিটের জন্য নয় বরং মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য নন্দীগ্রামে ভোটে দাঁড়াতে চলেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বললেন, “আমারতো ঘরের কেন্দ্র ভবানীপুর। আমিতো ওখানেই থাকি। আমাকে তো কিছু করতেই হতো না। কিন্তু আমি যেদিন শেষ নন্দীগ্রামে এসেছিলাম তখন নন্দীগ্রাম আসনটা খালি ছিল। তখন কোন বিধায়ক ছিল না। তাই আমি তখন দেখতে চেয়েছিলাম মানুষের ভালোবাসা আমার দিকে আসে কিনা।”
তেখালি মাঠের জনসভায় থেকে আপনাদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেছিলাম আমি এখানকার প্রার্থী হলে আপনাদের কেমন লাগবে? সেদিন মানুষের ভালোবাসা আমাকে এই দিকে টেনে এনেছে। আপনাদের মধ্যে উদ্দীপনা, সাহস রয়েছে যা আমাকে এই কেন্দ্রে প্রার্থী হতে উদ্দীপিত করে। আমার দুচোখে শুধু নন্দীগ্রাম।” মমতাকে এদিন আবারো শোনা গেল তার ট্রেডমার্ক স্টাইলে বলতে, “ভুলতে পারি নিজের নাম, ভুলবো নাকো নন্দীগ্রাম।” এদিন কার জনসভা থেকে তিনি নিজের প্রার্থী হবার সমস্ত কারণ সকলের সামনে তুলে ধরেছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “গ্রামের দিকে আমার একটা টান রয়েছে বরাবর। আমার মাথায় একটাই জিনিস ছিল, আমি হয় নন্দীগ্রামে প্রার্থী হব না হলে সিঙ্গুরে প্রার্থী হব। এই দুটোই হলে আন্দোলনের পীঠস্থান।”এছাড়াও তৃণমূল কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বললেন, “আপনারা যদি মনে করেন এই আসনে আমার দাঁড়ানো উচিত তাহলেই আমি আগামীকাল মনোনয়ন পেশ করব। নতুবা আমি মনোনয়ন পেশ করব না।” দর্শক আসন থেকে বিপুল সাড়া পাওয়ার পর জনগণের উদ্দেশ্যে মমতার প্রশ্ন, আপনারা আমাকে ভোট দেবেন তো? স্বভাবতই তৃণমূল নেত্রী কে সবাই ভোট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এবারের নির্বাচনে নন্দীগ্রাম আসন থেকে প্রার্থী হতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামীকাল তিনি মনোনয়নপত্র পেশ করতে চলেছেন। অন্যদিকে তার বিপরীতে বিজেপির প্রার্থী হতে চলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু মনোনয়নপত্র পেশ করবেন আগামী ১২ মার্চ তারিখে। তার পরেই তিনি মিঠুন চক্রবর্তী কে সঙ্গে নিয়ে শুরু করে দেবেন নির্বাচনী প্রচার। অন্যদিকে বামেরাও নন্দীগ্রাম আসনকে টার্গেট নিয়েছে। এতদিন পর্যন্ত সিপিআইয়ের গড হিসেবে পরিচিত নন্দীগ্রাম আসনে প্রথমবারের জন্য প্রার্থী দিতে চলেছে সিপিআইএম। বাম দলনেতা বিমান বসু বলেছেন, ‘আব্বাস সিদ্দিকীর আইএসএফ এখনো ততটা জনপ্রিয়তা পায়নি যে এরকম একটা হাইপ্রোফাইল কেন্দ্রে ভালো কাজ করবে। অন্যদিকে যদি এই কেন্দ্রে আইএসএফ প্রার্থি দেয় তাহলে সারাদেশের কাছে একটা ভুল বার্তা যাবে, বামফ্রন্ট বিজেপিকে সুবিধা করে দেওয়ার জন্য আইএসএফ কে এই কেন্দ্র ছেড়ে দিয়েছে। তাই আমরা এই কেন্দ্রে ভালো প্রার্থী দেব।এখনো পর্যন্ত আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিনি কিন্তু নন্দীগ্রাম কেন্দ্রের মত একটি হাইপ্রোফাইল কেন্দ্রে আমরা এমন প্রার্থী দেবো যার রাজ্যস্তরে পরিচিতি রয়েছে।”