সম্প্রতি বিজেপি ত্যাগ করার ঘোষণা করে দিয়েছেন বিজেপির সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি বিজেপিতে বেসুরো হতে শুরু করেছিলেন। একটা সময় এমন এসেছিল যখন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব সকলের সামনে পর্যন্ত চলে এসেছিল। কিন্তু তারপরেও কোনোভাবে সামলানো গেলেও আর শেষরক্ষা হলনা। বিজেপি ত্যাগের ঘোষণা সরাসরি করে দিলেন বাবুল। একটি ফেসবুক পোস্ট করে তিনি এই কথা সকলের উদ্দেশ্যে জানিয়ে দিয়েছেন। মূলত মন্ত্রিত্ব চলে যাওয়ার পরে এবং বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে টালিগঞ্জ কেন্দ্র থেকে বড়ো ব্যবধানে হারের সম্মুখীন হওয়ার পরেই তিনি এই দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেই জানা যায়।
তবে নিজের পোস্টে তিনি জানিয়েছিলেন, তিনি শুধু সোশাল কাজ করবেন, কোনো দলে যোগদান করবেন না। তার পোস্টের একটি লাইন ছিল, ‘আমি এখন কোনো দলেই যোগদান করছি না তৃণমূল, সিপিআইএম কিংবা কংগ্রেস’। তবে ঘন্টাখানেকের মধ্যেই এই দলবদলের লাইনটি মুছে যায় তার পোস্ট থেকে। এরপর থেকেই সকলের ধারণা বিজেপি ছাড়লেও রাজনীতি থেকে সরাসরি বেরিয়ে যাবেন কিনা সেটা নিয়ে সন্দেহ আছে। আর যদি রাজনীতি থেকে না বের হন, এবং বিজেপি ত্যাগ করেন, তাহলে তার কাছে সবথেকে ভালো অপশন মূলত তৃণমূলে যোগদান। এমনিতেও মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পরে তৃণমূল নেত্রী বাবুলের পাশেই দাড়িয়েছেন।
তাই খুব স্বাভাবিক ভাবেই বাবুলের দলবদলের প্রসঙ্গ এখন উঠে আসছে রাজনীতির আঙিনায়। বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবির পরে বহু কর্মী সমর্থক, নেতা মন্ত্রী বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে আবারো ফিরে এসেছেন। এদের মধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য দলবদল মুকুল রায় এবং শুভ্রাংশু রায়ের, যারা ২০১৭ সালে তৃণমূল ছেড়ে চলে গেছেন গেরুয়া হতে। তাহলে কি এই দলবদলুদের তালিকায় নতুন সংজোজন হতে চলেছেন গানের জগৎ থেকে উঠে আসা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বাবুল?
এই নিয়ে তৃণমূল নেতা মলয় ঘটক কি বলছেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোর্টে বল ঠেলে দিয়ে আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের বক্তব্য, এই নিয়ে সমস্ত সিদ্ধান্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেবেন, তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। এছাড়াও বাংলার বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় বিজেপির হেড স্যার নরেন্দ্র মোদিকে কটাক্ষের সুরে তোপ দেগে মলয়ের মন্তব্য, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনবিরোধী নীতি অনুসরণ করলে বাংলার বিজেপি একেবারে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে। বাংলার বিজেপির কার্যালয় খোলার মতো লোক পাওয়া যাবেনা।” যেখানে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের দিকে তৃণমূলের পাখির চোখ সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে মলয় ঘটকের এই মন্তব্য সিঁদুরে মেঘ দেখছে বিজেপি। কারণ, যদি বাবুল সুপ্রিয় তৃণমূলে যান তাহলে বর্ধমান দখল তৃণমূলের পক্ষে আরো সহজ হয়ে যাবে।