আপনিও হতে পারেন কোটিপতি, জেনে নিন কোথায় কিভাবে আপনাকে বিনিয়োগ করতে হবে
বিনিয়োগ সংক্রান্ত একটি জরিপে উঠে এসেছে, ভারতের প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ চার বছরেরও কম সময় টাকা রাখেন শেয়ার মার্কেটে
কমপক্ষে ১ কোটি টাকার বিশাল পোর্টফোলিও রয়েছে এমন অনেক বিনিয়োগকারী আছেন যারা ৫০ বছর বয়সে তাদের পোর্টফোলিওর মূল্য অনেকাংশে হারিয়ে ফেলেছেন। একটা মোটা টাকা তৈরি করতে দীর্ঘ সময়ের জন্য বিনিয়োগ তো প্রয়োজন। তবে সবথেকে বড় ব্যাপার হলো, ৩৫ থেকে ৪৯ বছরের মধ্যে একজন মানুষের সব থেকে বেশি সম্পদ সৃষ্টি হয়। তাই এই বয়সের মধ্যে বিনিয়োগকারীকে ভালোভাবে বিনিয়োগ করা উচিত। সেবি দ্বারা নির্ধারিত বিনিয়োগ উপদেষ্টা তহবিলের একটি জরিপের মাধ্যমে এই বিশেষ বিষয়গুলি সামনে এসেছে। এই জরিপে অংশগ্রহণ করেছিলেন প্রায় দুই হাজার জন মানুষ, যাদের মধ্যে শতভাগই ভারতীয়। সমীক্ষায় দেখা গেছে প্রায় ৫০ শতাংশ বিনিয়োগকারী চার বছরেরও কম সময় ধরে স্টক মার্কেটে নিজেদের বিনিয়োগ বজায় রেখেছেন। অন্যদিকে ১২% লোক এমন ছিলেন, যারা এক বছরেরও কম সময়ের জন্য স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করেছিলেন। অর্থাৎ, প্রায় ৬২ শতাংশ মানুষ পুরো ব্যবসার চক্রটা এখনো পর্যন্ত দেখে উঠতে পারেননি। তবে বাকিরা শেয়ার মার্কেটের হাল হকিকত মোটামুটি ভালোভাবেই বোঝেন বলেই ধরে নেওয়া যেতে পারে। ব্যবসা চক্র সেই সময় সক্রিয় হয় যখন, অর্থনৈতিক মন্দার পর বাজার নতুন করে উঠতে শুরু করে। আর এই বুম পিরিয়ড প্রায় পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ বছর পর্যন্ত স্থায়ী থাকে। যদি মন্দার সময়ে স্টকে বিনিয়োগ করা হয়, এবং বুম পিরিয়ডে রিটার্ন পাওয়া যায়, তাহলে আপনার অর্থনৈতিক শ্রী বৃদ্ধি হবে ব্যাপক।
এই ব্যাপারে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ মনিশ গোয়েল বলছেন, “অনেক লোক এমন আছেন যাদেরকে প্রথম প্রজন্মের বিনিয়োগকারী বলা যেতে পারে। এ পিছনে অনেক কারণ থাকে। ডিসকাউন্ট ব্রোকারেজ থেকে শুরু করে প্রযুক্তিভিত্তিক বিনিয়োগ প্লাটফর্ম, সাশ্রয়ী মূল্যের উচ্চগতির ইন্টারনেট, আর্থিক শিক্ষার প্রসার, ক্রমবর্ধমান আয় এবং মানুষের ক্রমবর্ধমান স্বপ্ন এর পিছনে মূল ভূমিকা পালন করে।” সমিক্ষায় আরো জানা গেছে, ৩৫ বছরের পরে যারা বিনিয়োগের বাজারে আসেন, তারা সরাসরি শেয়ারে বিনিয়োগ করতেই বেশি পছন্দ করেন। ভালো বিনিয়োগযোগ্য তহবিলের প্রাপ্যতা, এবং বৃহত্তর দায়িত্ববোধ, সব মিলিয়েই শেয়ার মার্কেট একটু ম্যাচিওর মানুষদের জন্য বেশি আগ্রহের হয়ে ওঠে।
গবেষণা রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, সাধারণত বিশ্বাস করা হয় যে বয়সের সাথে সাথে স্টকে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা উচিত। অর্থাৎ ৩৫ বছরের বেশি বয়সের বিনিয়োগকারীরা সাধারণত স্টকে বিনিয়োগ করতে বেশি পছন্দ করেন। তবে প্রবীণ নাগরিক যারা রয়েছেন অর্থাৎ ষাট বছরের বেশি যাদের বয়স তারা কিন্তু সাধারণত দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করতে বেশি স্বচ্ছন্দ। তার কারণ অবশ্যই নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। তিন বছরের জন্য একটি শেয়ারে টাকা রাখলেও, বেশিদিন ধরে একটি শেয়ারেই বিনিয়োগ করে রাখা তারা বিশেষ পছন্দ করেন না।
তবে এর পাশাপাশি, ভারতে এমন অনেক মানুষও আছেন যারা তহবিল তৈরির জন্য স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করতে পছন্দ করেন। সমীক্ষায় অংশ নেবার ৫৭ শতাংশ মানুষ বলেছেন, তারা একটি নির্দিষ্ট নিয়মে স্টকে বিনিয়োগ করতে চান কারণ তারা তাড়াতাড়ি অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অর্থাৎ তাদের কম সময়ের মধ্যে একটা বিশাল তহবিল তৈরি করতে হবে, যাতে তাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত থাকে। অন্যদিকে ২৫ শতাংশ মানুষ এমন রয়েছেন, যারা নিজেদের লাইফ স্টাইল আপডেট করার জন্য বিনিয়োগে ইচ্ছুক। তবে হ্যাঁ মেট্রো শহরের মানুষের অবশ্যই বাজারের উত্থান পতন নিয়ে বেশি সচেতন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি বাজারের উত্থান পতনের একটা জ্ঞান থাকে, তাহলে যেকোনো ব্যক্তি ভালোভাবে বিনিয়োগ পরিকল্পনা করতে পারেন। প্রথমবার হয়তো তিনি ক্ষতির সম্মুখীন হবেন, তবে পরে নিশ্চিতভাবে একটা না একটা সময়ে তিনি লাভ দেখবেনই।